ইউরোপের ৮টি মনোমুগ্ধকর হাইকিং: যারা প্রথমবার ট্রেকিং করতে চান!

ইউরোপ ভ্রমণে পাহাড় পথের আকর্ষণ বাড়ছে, আর এই সুযোগে যারা প্রথমবারের মতো ট্রেকিং বা হাইকিং করতে চান, তাদের জন্য দারুণ কিছু গন্তব্য রয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এমন কিছু পথ আছে, যা সহজে হেঁটে উপভোগ করা যায়, যেখানে প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য পথের ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়।

আজকে আমরা তেমন কয়েকটি সহজ পথের সন্ধান দেবো, যা নতুন ট্রেকারদের জন্য আদর্শ হতে পারে।

  1. ট্রে সিমে ডি লাভারেডো, ইতালি (৯ কিলোমিটার)
  2. সেন্তিয়োরো আজ্জুরো, ইতালি (১৩ কিলোমিটার)
  3. শ্যমিন দ্য পুই, ফ্রান্স (৬৪ কিলোমিটার)
  4. হ্যাড্রিয়ান্স ওয়াল, ইংল্যান্ড (৩৪ কিলোমিটার)
  5. স্টকহোম আর্কিপেলাগো ট্রেইল, সুইডেন (৯.৬ কিলোমিটার)
  6. হাইডশ্নুকেনভেগ, জার্মানি (৪৮ কিলোমিটার)
  7. লেখওয়েগ, অস্ট্রিয়া (১২৪ কিলোমিটার)
  8. হ্যালিন ফেল, ইংল্যান্ড (১.৬ কিলোমিটার)

ইতালির ডলোমাইট পর্বতমালায় অবস্থিত এই পথটি ট্রেকিং-এর জন্য বেশ জনপ্রিয়। অসাধারণ পাথুরে পাহাড়ের দৃশ্য আর পরিমিত উচ্চতার কারণে এটি নতুনদের জন্য উপযুক্ত। রিফিউজিও আউরোনজো থেকে যাত্রা শুরু হয়ে গাড়ি পার্কিং পর্যন্ত প্রায় ৩-৪ ঘণ্টার এই পথটিতে জুন বা সেপ্টেম্বর মাসে ভ্রমণ করা ভালো।

ইতালির লিগুরিয়ার সিনকুয়ে টেরের পাঁচটি গ্রামকে যুক্ত করেছে এই পথ। যারা সমুদ্র ভালোবাসেন তাদের জন্য এই পথটি দারুণ। সাধারণত ২-৩ দিনের এই পথে এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে ভ্রমণ করা যেতে পারে। তবে জুলাই-আগস্টে অতিরিক্ত গরম ও পর্যটকদের ভিড় থাকে।

যারা একটু বেশি সময় নিয়ে ট্রেকিং করতে চান, তাদের জন্য ফ্রান্সের এই পথটি আদর্শ। যদিও পথটি প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ, তবে এর একটি অংশ বেছে নেওয়া যেতে পারে। এখানকার সবুজ ভূমি, পাহাড় আর মনোরম পরিবেশে হেঁটে বেড়ানো এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। আরামদায়ক এই পথ পাড়ি দিতে ৪ দিনের মতো সময় লাগতে পারে।

ঐতিহ্য ভালোবাসেন এমন মানুষের জন্য ইংল্যান্ডের এই পথটি দারুণ। এটি একটি ঐতিহাসিক স্থান, যেখানে প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ আর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন বিদ্যমান। এখানকার উঁচু-নিচু পথগুলো হাঁটার জন্য বেশ সহজ। ৪-৫ দিনে এই পথ পাড়ি দেওয়া যেতে পারে।

সুইডেনের এই দ্বীপ-ট্রেকিং পথটি স্টকহোম শহরের খুব কাছেই অবস্থিত। যারা শহরের কোলাহল থেকে দূরে প্রকৃতির মাঝে কিছুটা সময় কাটাতে চান, তাদের জন্য এটি দারুণ। গ্রিন্ডা দ্বীপের চারপাশে হেঁটে এখানকার বনভূমি, পাথুরে সৈকত আর শান্ত উপসাগর উপভোগ করা যেতে পারে। সাধারণত ২ দিনের এই ভ্রমণ জুনে বা জুলাই মাসে করা ভালো।

২০১৪ সালে জার্মানির সবচেয়ে সুন্দর হাইকিং পথ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল এই পথ। এটি লুনবার্গ এবং সাউদার্ন হিথের মাঝে অবস্থিত, যেখানে পাহাড়ের উচ্চতা খুব বেশি নয়। আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে এখানকার ল্যাভেন্ডার ফুল ফোটে, যা এখানকার সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে তোলে। সাধারণত ৩ দিনের এই পথটি ট্রেকিং করার জন্য উপযুক্ত।

আল্পস পর্বতমালার এই পথটি একটি নদীর পাশ দিয়ে গেছে। যারা পাহাড়ের দৃশ্য দেখতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এই পথ ধরে হেঁটে গেলে সবুজ বন, ঘাসযুক্ত মাঠ এবং আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতু দেখা যায়। ৮-১০ দিনের এই ভ্রমণে প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করা যেতে পারে।

যারা পরিবার নিয়ে ট্রেকিং করতে চান, তাদের জন্য হ্যালিন ফেল একটি চমৎকার গন্তব্য। লেক ডিস্ট্রিক্ট ন্যাশনাল পার্কের পাশে অবস্থিত এই পথটি পাহাড়ের উপরে উঠতে খুব বেশি সময় লাগে না। এখানকার সবুজ ঘাসযুক্ত পথ দিয়ে হেঁটে সহজে পাহাড়ের চূড়ায় ওঠা যায়।

ইউরোপের এই হাইকিং পথগুলো নতুন ট্রেকারদের জন্য খুবই উপযোগী। তাই, যারা ট্রেকিং শুরু করতে চান, তারা এই স্থানগুলো ভ্রমণ করতে পারেন। তবে, ভ্রমণের আগে অবশ্যই ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *