বিপদ! বিড়ালের তীব্র রাগ কমানো কি সম্ভব?

বিড়ালের রাগ নিয়ন্ত্রণে: ধৈর্য আর ভালোবাসায় ভীতু বিড়ালকে জয়

বর্তমান সময়ে, বিশেষ করে ঢাকা ও অন্যান্য শহরে, বিড়াল পোষার প্রবণতা বাড়ছে। অনেকেরই বাসায় এখন আদরের বিড়ালছানা রয়েছে।

কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, কিছু বিড়াল সহজে মানুষের সঙ্গে মিশতে চায় না, বরং কিছুটা ভীতু বা রাগী হয়ে থাকে। তাদের শান্ত ও বন্ধুত্বপূর্ণ করে তোলার উপায় কী? সম্প্রতি, এমন একটি অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।

চলুন, সেই গল্পটি শোনা যাক, যেখানে একটি ভীতু বিড়ালকে ভালোবাসা ও ধৈর্যের মাধ্যমে জয় করার চেষ্টা করা হয়েছে।

গল্পের শুরুটা হয় লুসি নামের একটি বিড়ালের বাচ্চার জন্ম দেওয়ার মধ্য দিয়ে। লুসি ছিল কিছুটা খিটখিটে স্বভাবের, আর তার বাচ্চাদের মধ্যেও ভিন্নতা দেখা যায়।

এদের মধ্যে একটি ছানা ছিল খুবই ভীতু প্রকৃতির, যার নাম দেওয়া হয়েছিল স্প্লিট। মানুষের সামান্য উপস্থিতিই তাকে ভয়ের কারণ করে তুলত।

অন্যান্য ছানারা যেখানে মানুষের সঙ্গে মিশতে চাইত, স্প্লিট থাকত সবসময় আড়ালে।

স্প্লিটকে মানুষের সঙ্গে পরিচিত করতে নানা চেষ্টা করা হয়। নরম গলায় কথা বলা, খাবার দেওয়া, খেলনা দিয়ে আকৃষ্ট করার মতো অনেক কিছুই করা হয়েছে, কিন্তু কোনো ফল হয়নি।

বিড়াল আচরণ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা জানান, বিড়ালের সামাজিকীকরণের জন্য জন্মের পর ২ থেকে ৮ সপ্তাহের সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই সময়ে তাদের মানুষের সঙ্গে মিশতে দেওয়া উচিত। যদি কোনো খারাপ অভিজ্ঞতা হয়, যেমন—আচমকা শব্দ বা আঘাত পেলে, তবে তারা মানুষের প্রতি ভীতু হয়ে যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, ভীতু বিড়ালকে শান্ত করতে হলে জোর করা যাবে না। বরং, তাদের নিজেদের গতিতে সবকিছু অনুভব করতে দিতে হবে।

তাদের কাছাকাছি বসে সময় কাটাতে হবে, তাদের ভয় কাটানোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তাড়াহুড়ো করলে ফল পাওয়া যাবে না।

ধৈর্য ধরে স্প্লিটের সঙ্গে সময় কাটানো শুরু হয়। লেখক মেঝেতে বসে বই পড়তেন, আর স্প্লিট ধীরে ধীরে তার কাছে আসার চেষ্টা করত।

প্রথমে খাবার দেওয়ার মাধ্যমে তার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা হয়। ধীরে ধীরে স্প্লিট লেখকের হাত থেকে খাবার নিতে শুরু করে, এমনকি আদরও সহ্য করতে শেখে।

এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, বিড়ালের রাগ বা ভীতি কমাতে ধৈর্য ও ভালোবাসার বিকল্প নেই।

প্রতিটি বিড়ালের নিজস্ব একটা জগৎ আছে, তাদের সেই জগৎকে সম্মান করে ধীরে ধীরে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করা যায়।

যদিও সব বিড়ালকে সবসময় কোলে নেওয়ার মতো বন্ধুত্বপূর্ণ করা সম্ভব নাও হতে পারে, তবে তাদের ভয় কাটিয়ে শান্ত ও সুখী করা যেতে পারে।

বর্তমানে স্প্লিট একটি নতুন পরিবারে গেছে। হয়তো সে এখনো কোলে উঠতে ভালোবাসে না, কিন্তু তার ভীতি অনেকটাই কমেছে।

বিড়ালদের ক্ষেত্রে তাদের নিজস্বতাকে সম্মান জানানোই আসল কথা।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *