১১ বছরের মেয়ে, কলেজে ডাবল ডিগ্রি! কিভাবে?

১১ বছর বয়সেই দুটি কলেজ ডিগ্রি! অকল্পনীয় হলেও, এমনই এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা এলিসা পেরালস। গণিত এবং বিজ্ঞান বিভাগে দুটি এসোসিয়েট ডিগ্রি অর্জন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে।

আর এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে তার বাবার একাগ্রতা এবং সঠিক শিক্ষাদান পদ্ধতি।

ক্যালিফোর্নিয়ার ইউকাইপা-র ক্র্যাফটন হিলস কলেজ থেকে সম্প্রতি স্নাতক হয়েছে এলিসা।

এরপর সে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, ইর্ভাইন-এ কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা শুরু করতে চলেছে।

খবরটি শুনে অনেকেরই চোখ কপালে ওঠার কথা। কারণ, এলিসার বর্তমান বয়স মাত্র এগারো বছর!

এলিসার বাবা রাফায়েল পেরালস, যিনি পেশায় আইনজীবী ছিলেন, মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এক বছর বয়স থেকেই তাকে বাড়িতে পড়ানো শুরু করেন।

রাফায়েল মনে করেন, এলিসা জন্ম থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিল।

তিনি বলেন, “ছোট থেকে ওর মধ্যে বিশেষ কিছু দেখেছি। তবে, ক্যালকুলাস বা ত্রিকোণমিতি তো আর সে জন্ম থেকে জানত না।

তাই, এই পর্যন্ত আসার জন্য আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে।”

প্রথমে, এলিসাকে বর্ণমালা শেখানো হয় এবং ছড়া গান শোনানো হতো।

আড়াই বছর বয়সে সে বই পড়তে শুরু করে।

রাফায়েল জানান, “আমরা ধীরে ধীরে এগিয়েছি। কোনো জাদু ঘটেনি।

সবকিছু ধাপে ধাপে হয়েছে।”

মেয়ের পড়াশোনার জন্য একসময় তিনি তার আইন পেশা ত্যাগ করেন।

বন্ধুদের অনেকে তখন এই সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছিলেন।

কিন্তু রাফায়েল মনে করেন, শুরু থেকেই তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং এই কাজটি তার কাছে আনন্দ ও সম্মানের বিষয়।

স্যান বার্নার্দিনোতে, এলিসার পড়াশোনা শুরু হতো সকাল আটটা থেকে, চলত বিকেল চারটা পর্যন্ত।

কোনো গ্রীষ্ম বা শীতের ছুটি ছিল না।

ছুটির দিনে তারা গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, মাউন্ট রাশমোর এবং ইয়েলোস্টোনের মতো জায়গায় ভ্রমণে যেতেন।

এলিসার যখন চার বছর বয়স, তখন তারা বুধবারের পড়াশোনা বন্ধ রেখে ডিজনিল্যান্ডে যেতেন।

রাফায়েল বলেন, “আমি চেয়েছিলাম ও সবসময় পড়াশোনায় আগ্রহী থাকুক, তাই প্রতি সপ্তাহে নতুন কিছু করার চেষ্টা করতাম, যাতে সে আনন্দ পায়।”

এলিসা যখন পাঁচ বছরে পা দেয়, তখন তার বাবা বীজগণিত পড়ানো শুরু করেন।

এরপর জ্যামিতি।

এলিসা যখন আট বছরের, তখন গণিতের এমন কিছু বিষয় সে জানতে চায়, যা রাফায়েলের পক্ষে পড়ানো সম্ভব ছিল না।

কারণ, তিনি নিজে ক্যালকুলাস বা ত্রিকোণমিতি বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন না।

সাধারণত, যেখানে অন্য শিশুরা তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হয়, সেখানে এলিসা কমিউনিটি কলেজে ভর্তি হয়।

বাবা রাফায়েল বলেন, “প্রথমবার সে কোনো পাবলিক ক্লাসরুমে গিয়েছিল।

আমার মনে হয়েছিল, হয়তো সে একটু অস্বস্তি বোধ করবে।

কিন্তু না, ক্লাসের অন্যদের সঙ্গে মিশে সে খুব খুশি হয়েছিল।

বাবা হিসেবে আমি সবসময় তার পাশে ছিলাম।”

বর্তমানে এলিসা থ্রিডি অ্যানিমেশন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং মহাকাশ ভ্রমণে আগ্রহী।

সে জানায়, ভবিষ্যতে সে এলন মাস্কের সঙ্গে মিলে মঙ্গলে উপনিবেশ গড়তে চায় অথবা চাঁদে বসবাস করতে চায়।

তথ্য সূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *