২০২৫ সালের বাজেট: জরুরি ঘোষণা! অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন?

যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী র‍্যাচেল রিভস সম্প্রতি ২০২৩ সালের বসন্তকালীন বাজেট পেশ করেছেন, যেখানে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার অঙ্গীকার করা হয়েছে। এই বাজেট দেশটির ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

বাজেটে প্রধান বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল সরকারি ব্যয়, কর নীতি, এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্কার। এছাড়াও, প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও এতে স্থান পেয়েছে।

এই বাজেট যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা এবং ভবিষ্যতের জন্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির একটি প্রতিচ্ছবি।

বাজেটে রাজস্ব নীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, তবে করের হার বাড়ানোর কোনো ঘোষণা আসেনি। বরং, কর ফাঁকি রোধে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আরও ১ বিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ১৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা, যেখানে ১ পাউন্ড = ১৩৮ টাকা, তারিখ: ১০ জুন ২০২৪) অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের কর কর্তৃপক্ষ এইচএমআরসি এই লক্ষ্যে কাজ করবে।

সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সংস্কারের অংশ হিসেবে, নতুন সুবিধাভোগীদের জন্য ইউনিভার্সাল ক্রেডিট হেলথ এলিমেন্ট কমানো হবে এবং তা পরবর্তীতে স্থিতিশীল রাখা হবে।

কর্মসংস্থান সহায়তার জন্য ১ বিলিয়ন পাউন্ড এবং কর্মসংস্থান কেন্দ্রগুলোর জন্য আরও ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ করা হয়েছে।

এই পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে ২০২৯-৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৪.৮ বিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৬৬ হাজার ২৪০ কোটি টাকা) সাশ্রয় হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছে।

ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অস্থিরতা মোকাবিলায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে (এমওডি) অতিরিক্ত ২.২ বিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৩০ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা) দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে।

এমওডি-র সরঞ্জাম বাজেটের কমপক্ষে ১০ শতাংশ প্রযুক্তি, যেমন ড্রোন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) জন্য ব্যয় করা হবে।

এছাড়াও, যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা উদ্ভাবনের জন্য ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ড এবং সাবমেরিন খাতে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড বরাদ্দ করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে মূল্যস্ফীতি ছিল ৩.২ শতাংশ, যা ২০২৭ সাল থেকে ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের ২ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে, ২০২৫ সালের জন্য জিডিপি বৃদ্ধির পূর্বাভাস ২ শতাংশ থেকে ১ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে, সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর চেষ্টা করবে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হিথ্রো বিমানবন্দরের তৃতীয় রানওয়ে নির্মাণ, পরিকল্পনা ও পেনশন সংস্কার, এবং নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা।

বাজেটে সরকারি ব্যয় কমানোরও পরিকল্পনা রয়েছে।

২০২৯-৩০ সালের মধ্যে সরকারি কার্যক্রমের খরচ ৩.৫ বিলিয়ন পাউন্ড কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

তবে, সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মূল খরচ (ডে-টু-ডে) এবং মূলধন উভয় ক্ষেত্রেই ব্যয় বাড়ানো হবে।

বসন্তকালীন বাজেট যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার একটি প্রয়াস।

এই বাজেট দেশটির নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *