ধ্বংসের পথে 23andMe: চমকে দেওয়া ৪টি চিত্র!

শিরোনাম: জেনেটিক পরীক্ষার কোম্পানি ২৩andMe-এর পতন: ডেটা সুরক্ষার উদ্বেগের মধ্যে দেউলিয়া হওয়ার পথে

বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া জেনেটিক টেস্টিং কোম্পানি ২৩andMe বর্তমানে এক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন। আর্থিক সংকটের কারণে তারা দেউলিয়া হওয়ার জন্য আবেদন করেছে। এই পরিস্থিতিতে কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা, সেই সঙ্গে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার বিষয়টিও নতুন করে আলোচনায় এসেছে।

ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক এই কোম্পানিটি ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। গ্রাহকদের বাড়িতে বসে সহজে ডিএনএ পরীক্ষার সুযোগ করে দেওয়ায় দ্রুত এর জনপ্রিয়তা বাড়ে। তারা লালার নমুনা সংগ্রহের কিট বিক্রি করে এবং সেই পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তির পূর্বপুরুষের পরিচয় ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ করে। একসময় কোম্পানিটির বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৫৮০ কোটি মার্কিন ডলার (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬১ হাজার কোটি টাকার সমান)। কিন্তু ২০২১ সালে পাবলিক হওয়ার পর থেকেই তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে শুরু করে।

কোম্পানিটির ব্যবসার মূল ভিত্তি ছিল গ্রাহকদের কাছ থেকে সংগৃহীত ডিএনএ পরীক্ষার কিট বিক্রি। এই কিটগুলোর দাম ছিল ৯৯ থেকে ৪৯৯ ডলার পর্যন্ত। গ্রাহকরা নমুনা পাঠানোর পর তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে রিপোর্ট দেওয়া হতো। যদিও গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু নতুন গ্রাহক তৈরি এবং সাবস্ক্রিপশন সেভাবে বাড়েনি। ফলে কোম্পানির আয় কমে যায় এবং লোকসান বাড়তে থাকে। গত বছর কোম্পানিটি তাদের কর্মীর ৪০ শতাংশ ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়। এমনকি, সম্প্রতি এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যান ওজিকি পদত্যাগ করেছেন।

আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি, ২৩andMe-এর জন্য উদ্বেগের আরেকটি কারণ হলো ডেটা সুরক্ষা। ২০১৬ সালে হ্যাকাররা তাদের ব্যবহারকারীদের প্রোফাইল ও জেনেটিক ডেটার অ্যাক্সেস পায়। এই ঘটনার পর গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে, গ্রাহকদের তাদের ডেটা মুছে ফেলার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। নিউ ইয়র্ক ও ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেলও ব্যবহারকারীদের ডেটা মুছে ফেলার আহ্বান জানিয়েছেন।

জেনেটিক তথ্য বিশ্লেষণ করে মানুষের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য যেমন – ডায়াবেটিস বা কিছু ক্যান্সারের ঝুঁকি সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়। এই তথ্যগুলি স্বাস্থ্য বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হলেও, ডেটা সুরক্ষার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই ধরনের সংবেদনশীল তথ্য কোম্পানির সম্ভাব্য ক্রেতাদের হাতে পড়লে তা অপব্যবহারের সম্ভাবনা থাকে।

বর্তমানে ২৩andMe-এর শেয়ারের দাম ১ ডলারেরও নিচে নেমে এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, একটি টেকসই ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করতে না পারা এবং ডেটা সুরক্ষার দুর্বলতা এই পতনের প্রধান কারণ।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *