অবিশ্বাস্য! আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে অস্ত্রোপচারে নতুন দিগন্ত!

দূর-দূরান্তে বসবাসকারী রোগীদের জন্য চিকিৎসা সেবা আরও সহজ করতে সাহায্য করতে পারে থ্রিডি প্রযুক্তি। সম্প্রতি, আফ্রিকার ঘানাতে এই প্রযুক্তির সফল পরীক্ষা চালানো হয়েছে।

এই অত্যাধুনিক পদ্ধতির মাধ্যমে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীরা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সঙ্গে অনলাইনে পরামর্শ করতে পারবে, যা তাদের উন্নত চিকিৎসার সুযোগ করে দেবে।

ঘানার কোফোরিডুয়া হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরা এই নতুন প্রযুক্তির পরীক্ষা করেছেন। একটি বিশেষ ভ্যানের ভেতরে বসানো থ্রিডি ক্যামেরার মাধ্যমে রোগীর শরীরের ত্রিমাত্রিক ছবি তৈরি করা হয়।

এরপর, সেই ছবি কম্পিউটার স্ক্রিনে প্রদর্শিত হয় এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ডাক্তাররা অনলাইনে যুক্ত হয়ে রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। এই পদ্ধতিতে, রোগীরা তাদের রোগের বিষয়ে একাধিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারে, যা উন্নত রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার পথ খুলে দেয়।

এই প্রকল্পের মূল উদ্যোক্তা মাইক্রোসফটের গবেষণা দল। তারা স্থানীয় ডাক্তার ও গবেষকদের সঙ্গে মিলিতভাবে এই প্রযুক্তি তৈরি করেছেন।

তাদের মতে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীদের জন্য অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে পরামর্শের ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি খুবই সহায়ক হবে। এমন অনেক দুর্গম এলাকা আছে যেখানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সংখ্যা খুবই কম। এই পরিস্থিতিতে, থ্রিডি টেলিমেডিসিন প্রযুক্তি রোগীদের জন্য চিকিৎসার সুযোগ আরও বাড়িয়ে দেবে।

ঘানাতে বসবাসকারী চার্লস ওউসু আসেকু নামের একজন রোগী, যিনি দীর্ঘদিন ধরে ঘাড়ের একটি সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। তিনি জানান, এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের ডাক্তারদের পরামর্শ পাওয়ার সুযোগ হয়েছে এবং এতে তিনি খুবই খুশি।

এই প্রযুক্তির কল্যাণে, কোফোরিডুয়ার ৬৯ বছর বয়সী জর্জ ওপোকু নামের এক রোগী, যিনি একটি বিরল ক্যান্সারে আক্রান্ত, সহজে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পেরেছেন।

তবে, এই প্রকল্পের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। আফ্রিকার অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো পর্যন্ত স্থিতিশীল ইন্টারনেট সংযোগ নেই।

তা সত্ত্বেও, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই প্রযুক্তি যদি সফলভাবে ব্যবহার করা যায়, তবে তা স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে একটি বড় পরিবর্তন আনতে পারে। কোরি-বু টিচিং হাসপাতালের সার্জন ড. কোয়ামে ডার্কো বলেন, এই প্রযুক্তি রোগীদের জন্য একাধিক ডাক্তারের পরামর্শ পাওয়ার সুযোগ করে দেবে।

বর্তমানে, বাংলাদেশেও অনেক মানুষ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাস করে, যেখানে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা এখনো একটি বড় সমস্যা। ঘানার এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, বাংলাদেশেও টেলিমেডিসিন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো যেতে পারে।

এর ফলে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের রোগীরা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারবে এবং উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পাবে।

আশা করা যায়, এই ধরনের প্রযুক্তি বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *