অজানা ‘৬-৭’ নিয়ে দ্বিধায় বিশ্ব! ডিকশনারি বলছে, বছরের সেরা শব্দ!

ডিকশনারি ডট কম-এর বর্ষসেরা শব্দ হিসেবে ‘৬-৭’ – শব্দটা কি আদতে কোনো শব্দ?

ভাষা একটি জীবন্ত সত্তা, যা সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়। নতুন নতুন শব্দ আসে, পুরনোরা হারিয়ে যায়, আবার কিছু শব্দ ফিরে আসে ভিন্ন রূপে।

ডিকশনারি ডট কম প্রতি বছর তাদের বর্ষসেরা শব্দ ঘোষণা করে, যা সেই বছরের সামাজিক প্রবণতা এবং ঘটনার প্রতিচ্ছবি হিসেবে কাজ করে। এবার তাদের বাৎসরিক তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ‘৬-৭’ – আপাতদৃষ্টিতে কোনো অর্থহীন শব্দগুচ্ছ, যা মূলত কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে।

ব্যাপারটা ঠিক কী? ‘৬-৭’ আসলে কোনো নির্দিষ্ট শব্দ নয়, বরং একটি ভাইরাল শব্দবন্ধ।

এর উৎপত্তি হয়েছে র‍্যাপার স্ক্রিলার “Doot Doot (6-7)” শিরোনামের গান থেকে। গানটি প্রকাশের পর, এটি টিকটকের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে পরে।

বাস্কেটবল খেলোয়াড় এবং বিশেষভাবে ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার খেলোয়াড়দের নিয়ে তৈরি হওয়া ভিডিওগুলোতে এই শব্দটির ব্যবহার দেখা যায়। এরপর থেকেই, ‘৬-৭’ যেন এক ধরণের অভ্যন্তরীণ ঠাট্টার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।

কিন্তু ‘৬-৭’-এর মানে কী? এর সঠিক কোনো সংজ্ঞা নেই।

অনেকে একে ‘মোটামুটি’, ‘এই আর কি’, অথবা ‘এমনই’ – এই ধরনের অর্থে ব্যবহার করে। আবার কারো কারো মতে, এর কোনো বিশেষ অর্থ নেই, বরং এটি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তাদের নিজস্ব জগৎ তৈরি করার একটি উপায়।

অনেক সময়, কোনো প্রশ্নের উত্তরে বিরক্ত করার উদ্দেশ্যেও এর ব্যবহার হতে দেখা যায়।

ডিকশনারি ডট কম-এর মতে, ‘৬-৭’ তাদের বর্ষসেরা শব্দ হওয়ার কারণ হলো, এটি বর্তমান সময়ের অনলাইন যোগাযোগের ধরন এবং প্রবণতাকে প্রতিফলিত করে।

তারা তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, এই শব্দটির ব্যবহার গ্রীষ্মকালে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এবং এখনো তা অব্যাহত রয়েছে।

এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে শিক্ষক এবং অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের এই শব্দ ব্যবহারের কারণ জানতে চেষ্টা করছেন।

কেউ কেউ একে গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছেন, আবার কেউ একে এড়িয়ে চলতে বলছেন। এমনকি, এই শব্দটির ব্যবহার কিভাবে বন্ধ করা যায়, সে বিষয়েও অনেকে বিভিন্ন উপায় বাতলেছেন।

ভাষা সবসময় পরিবর্তনশীল।

সামাজিক মাধ্যম এবং ইন্টারনেটের বিস্তারের ফলে, ভাষার এই পরিবর্তনের গতি বেড়েছে। ‘৬-৭’-এর মতো শব্দগুলো সেই পরিবর্তনেরই অংশ।

হয়তো এই শব্দটির কোনো নির্দিষ্ট অর্থ নেই, কিন্তু এর মাধ্যমে একটি প্রজন্মের ভাবনা এবং যোগাযোগের ধরন ফুটে ওঠে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *