ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে মন্দা দেখা যাচ্ছে, সেই বিষয়ে সতর্ক করেছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি)। সংস্থাটি বলছে, এই নীতি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে কমিয়ে দিচ্ছে এবং মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ওইসিডি জানিয়েছে, তারা চলতি বছর এবং আগামী বছরের জন্য বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বড় ধরনের ধাক্কা লাগতে পারে।
ওইসিডি’র মতে, বাণিজ্য বাধা বৃদ্ধি এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ার কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যাচ্ছে। এই কারণে তারা চলতি বছরে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৩.৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.১ শতাংশ করেছে।
যেখানে গত বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ছিল ৩.২ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাণিজ্য বাধা আরও বাড়লে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরও কমবে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়বে।
অন্যদিকে, বাণিজ্য বাধা কমালে অনিশ্চয়তা হ্রাস পাবে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদার হবে। ওইসিডি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, যদি ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, তবে তিনটি দেশেরই অর্থনৈতিক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়বে।
এর ফলে মেক্সিকোর অর্থনীতি গভীর মন্দার দিকে চলে যেতে পারে। ২০২৫ সালে দেশটির উৎপাদন ১.৩ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে ০.৬ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে। এছাড়া, কানাডার প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও প্রায় অর্ধেক কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসও কমানো হয়েছে। চলতি বছর দেশটির প্রবৃদ্ধি ২.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২.২ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে ২.১ শতাংশ থেকে ১.৬ শতাংশ করা হয়েছে।
চীনের প্রবৃদ্ধি ২০২৪ সালের ৪.৮ শতাংশ থেকে কমে ২০২৬ সালে ৪.৪ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। যুক্তরাজ্যের মতো তুলনামূলকভাবে ছোট এবং মুক্ত অর্থনীতিও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও ব্যবসায়িক বিনিয়োগের নিম্নমুখী প্রবণতার শিকার হবে।
এই পরিস্থিতিতে, বিশ্ব অর্থনীতির এই সংকট বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বলতা বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য এবং রেমিটেন্সের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
তবে, এই বিষয়ে এখনই কোনো সুনির্দিষ্ট মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান