যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন আগ্রাসন বিষয়ক তদন্ত সংস্থা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলের প্রচেষ্টায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (International Centre for the Prosecution of the Crime of Aggression against Ukraine – ICPA) গঠিত হয়েছিল ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে। বাইডেন প্রশাসন এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিচারের মুখোমুখি করার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে সেই প্রতিশ্রুতিতে চিড় ধরল।
জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে রাশিয়ার আগ্রাসনের সঙ্গে জড়িত বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া এবং ইরানের মতো দেশগুলোর নেতাদের জবাবদিহিতার বিষয়টিও অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর, তৎকালীন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড যুদ্ধাপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে একটি বিশেষ দল গঠন করেছিলেন। সেই দল ইউক্রেনের আইনজীবীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিল। এছাড়া, যুদ্ধাপরাধের শিকার হওয়া ১ লক্ষ ৫০ হাজারের বেশি ঘটনার তদন্তেও তারা সহায়তা করেছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ এমন এক সময়ে এলো, যখন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে। তবে, এর মধ্যেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে ট্রাম্পের করা কিছু মন্তব্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা স্থগিত করার বিষয়টি আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রিমিনাল জাস্টিস কো-অপারেশন এজেন্সি (Eurojust) জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের পরও আইসিপিএ তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। তারা আন্তর্জাতিক অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং বিশ্ব রাজনীতিতে একটি নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর উপর এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে। বাংলাদেশও আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এর ফলে নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান