কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি ফ্রান্স সফরে গিয়েছেন, যেখানে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক কিছুটা অবনতির প্রেক্ষাপটে, ফ্রান্সের মতো নির্ভরযোগ্য মিত্রদের কাছ থেকে সমর্থন আদায় করা।
সোমবার প্যারিসের এলিসি প্রাসাদে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কার্নি বলেন, ফ্রান্সের মতো বিশ্বস্ত মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা কানাডার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কানাডার সম্পর্ক বর্তমানে বেশ কঠিন সময় পার করছে। ট্রাম্প এরই মধ্যে কানাডার পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন এবং দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত করে ৫১তম অঙ্গরাজ্য করার হুমকি দিয়েছেন, যা কানাডীয়দের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
কার্নি স্পষ্ট করে বলেছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এমনটা হতে দেবেন না, তার পূর্বসূরি জাস্টিন ট্রুডোও একই কথা বলেছিলেন।
ম্যাক্রোঁ ট্রাম্পের কানাডা আক্রমণের বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও, তিনি উল্লেখ করেন যে শুল্ক শুধুমাত্র মুদ্রাস্ফীতি বাড়ায়।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে, তারা তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো তাদের ঘনিষ্ঠ এবং সবচেয়ে বিশ্বস্ত অংশীদারদের সঙ্গে তৈরি করতে চান। “আমরা একসঙ্গে শক্তিশালী, আমাদের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে আরও ভালো এবং আমাদের সার্বভৌমত্বের সম্পূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সক্ষম।
ফ্রান্স ও কানাডার মধ্যেকার এই বৈঠকটি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
ম্যাক্রোঁ বলেছেন, ফ্রান্স এবং কানাডা উভয়ই “শান্তিপূর্ণ শক্তি”, যারা কিয়েভকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে এবং একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য “রাশিয়ার কাছ থেকে সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি” চাইবে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী কার্নি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আগামী জুনে কানাডার আলবার্তায় অনুষ্ঠিতব্য জি-৭ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
কার্নি এর আগে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের সঙ্গে এবং ব্রিটেনের প্রধান ও কানাডার রাষ্ট্রপ্রধান রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
তবে, এখন পর্যন্ত ওয়াশিংটনে তার কোনো সফরের পরিকল্পনা নেই।
যদিও তিনি গত সপ্তাহে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যদি কানাডার সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখান, তাহলে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে রাজি আছেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা