লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে একটি আইকেয়া (IKEA) স্টোরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থাকে (জিআরইউ) দায়ী করেছেন দেশটির সরকারি কৌঁসুলিরা। তাঁদের মতে, গত বছরের মে মাসে সংঘটিত এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ছিল ‘সন্ত্রাসী কার্যক্রম’।
ন্যাটোভুক্ত দেশ লিথুয়ানিয়া ইউক্রেনের অন্যতম মিত্র এবং তারা প্রায়ই রাশিয়ার নাশকতামূলক কার্যকলাপের বিষয়ে সতর্ক করে থাকে।
সোমবার, লিথুয়ানিয়ার সরকারি কৌঁসুলি কার্যালয় জানায়, মে মাসের ওই অগ্নিকাণ্ডের জন্য রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা জিআরইউ দায়ী। এই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও, কৌঁসুলি আর্তুর উরবেলিস সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা এই ঘটনাকে গুরুতর পরিণতির সন্ত্রাসবাদ হিসেবে দেখছি।”
এই অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দুইজন ইউক্রেনীয় নাগরিককে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনকে লিথুয়ানিয়া এবং অন্যজনকে পোল্যান্ডে আটক করা হয়েছে।
জানা গেছে, এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল রাশিয়া। তারা বিভিন্ন মাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই নাশকতামূলক কাজটি সংগঠিত করে।
আটককৃত ব্যক্তিরা ২০১৪ সালের বসন্তে পোল্যান্ডে প্রবেশ করে এবং সেখানে তারা মিলিত হয়ে লিথুয়ানিয়া ও লাটভিয়ায় শপিং সেন্টারগুলোতে আগুন লাগানোর পরিকল্পনা করে। এই কাজের জন্য তাদের ১০,০০০ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১২ লক্ষ টাকার সমান) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।
কৌঁসুলি উরবেলিস আরও জানান, শুধু শপিং সেন্টারই নয়, একাধিক সুপারমার্কেটেও আগুন লাগানোর পরিকল্পনা ছিল।
এই ঘটনার সঙ্গে পোল্যান্ডে সংঘটিত হওয়া একই ধরনের ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে। পোল্যান্ড বর্তমানে প্রায় ৩০টির মতো নাশকতামূলক কার্যকলাপের প্রস্তুতি অথবা ঘটনার তদন্ত করছে।
পোল্যান্ডের কৌঁসুলি przemyslaw nowak বলেন, “ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রায় আক্রমণের পর থেকে, আমরা পোল্যান্ডে বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতা বৃদ্ধি হতে দেখছি, যার মধ্যে প্রধানত রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সক্রিয় রয়েছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমাদের কাছে এমন প্রমাণ আছে যে পোল্যান্ডে, এমনকি শুধু পোল্যান্ডেই নয়, বেশ কয়েকটি সুসংগঠিত দল নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করছে।”
লিথুয়ানিয়ার এই অভিযোগের বিষয়ে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইউক্রেনীয়দের ভাড়া করে নাশকতামূলক কাজ করানো ‘অত্যন্ত নিন্দনীয়’।
তিনি আরও বলেন, “বন্ধু রাষ্ট্রগুলো, লিথুয়ানিয়ার কৌঁসুলি অফিসের তদন্ত আমাদের সন্দেহকে নিশ্চিত করেছে যে ভিলনিয়াস এবং ওয়ারশতে শপিং সেন্টারগুলোতে আগুন লাগানোর পেছনে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দায়ী।”
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষাপটে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান