সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে শব্দ-তরঙ্গ সৃষ্টিকারী যন্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, গত শনিবারের প্রতিবাদ মিছিলে এই বিশেষ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে, যার ফলে অনেকে তীব্র শব্দ-যন্ত্রণা, মাথা ঘোরা ও আতঙ্কের শিকার হয়েছেন।
যদিও দেশটির সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিক্ষোভটি মূলত দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের অংশ, যা সম্প্রতি একটি রেলওয়ে স্টেশনের ছাদ ভেঙে ১৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পর থেকে তীব্রতা লাভ করেছে।
বিক্ষোভকারীরা নিহতদের স্মরণে নীরবতা পালন করছিলেন, তখনই এই শব্দ-তরঙ্গ সৃষ্টিকারী যন্ত্র ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে তীব্র মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব এবং দিকভ্রান্তির অভিযোগ করেছেন।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, নিরাপত্তা বাহিনী সম্ভবত ‘লং রেঞ্জ অ্যাকুয়াস্টিক ডিভাইস’ (LRAD) নামের একটি বিশেষ শব্দ-তরঙ্গ সৃষ্টিকারী যন্ত্র ব্যবহার করেছে। এই যন্ত্রটি অনেক দূর থেকে উচ্চ-কম্পাঙ্কের শব্দ তরঙ্গ তৈরি করতে পারে, যা মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে সক্ষম।
যদিও এই দাবির সত্যতা অন্য কোনো মাধ্যমে যাচাই করা যায়নি। সার্বিয়ার বিরোধী দল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ঘটনার স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
তারা আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার কথা বলছে। দেশটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বোরিস তাদিচও আন্তর্জাতিক সহায়তার মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিরোধী দল ‘মুভ-চেঞ্জ’ আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের পাশাপাশি ইউরোপীয় কাউন্সিল এবং নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থার কাছে একটি আবেদন পেশ করা হয়েছে, যাতে এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। আবেদনে স্বাস্থ্য ও মানবাধিকারের ওপর এর প্রভাবের চিকিৎসা, আইনগত ও প্রযুক্তিগত দিকগুলো অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুচিচ এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি একে ‘মিথ্যাচার’ আখ্যা দিয়ে এর পেছনে দেশকে ধ্বংস করার চক্রান্ত দেখছেন।
ভুচিচ বলেছেন, তিনি খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে তদন্তের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এবং রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসকে (এফএসবি) আমন্ত্রণ জানাবেন। তিনি তাদের মাধ্যমে প্রমাণ করতে চান যে, যারা শব্দ-তরঙ্গ অস্ত্রের ব্যবহারের অভিযোগ তুলছেন, তারা মিথ্যা বলছেন।
অন্যদিকে, সরকারি সূত্রগুলোও স্বীকার করেছে যে, কয়েক বছর আগে তারা এই ধরনের একটি যন্ত্র তাদের নিরাপত্তা বহরে যুক্ত করেছিল, তবে শনিবারের বিক্ষোভে এটি ব্যবহার করা হয়নি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন
 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
				
			 
				
			 
				
			 
				
			