বিচারকের নির্দেশ সত্ত্বেও অধ্যাপিকাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করল যুক্তরাষ্ট্র!

যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত একজন অধ্যাপকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা সত্ত্বেও, ব্রাউন ইউনিভার্সিটির এক অধ্যাপককে লেবাননে ফেরত পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, ওই অধ্যাপকের বৈধ ওয়ার্ক ভিসা (work visa) থাকা সত্ত্বেও এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দেশটির অভিবাসন কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।

গণমাধ্যম সূত্রে খবর, ৩৪ বছর বয়সী রাশিয়া আলাউয়েহ নামের ওই অধ্যাপককে সম্প্রতি লেবাননে ফেরত পাঠানো হয়। ফেডারেল প্রসিকিউটরদের মতে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন কিছু ছবি ও ভিডিও পাওয়ার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হিজবুল্লাহ একটি রাজনৈতিক ও সামরিক সংগঠন, যা লেবাননে সক্রিয়।

এছাড়াও, অধ্যাপক আলাউয়েহ হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। আলাউয়েহর এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রশাসনের অভিবাসন নীতি ক্রমশ কঠোর হচ্ছে।

এর আগে, গত রবিবার, আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও, প্রায় ২৫০ জনের বেশি ভেনেজুয়েলা ও সালভাদরের নাগরিককে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে লেবানন থেকে ফেরার সময় বোস্টনের লোগান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাশিয়া আলাউয়েহকে আটক করা হয়।

এরপর তাঁর আইনজীবী আদালতের কাছে দ্রুত একটি মামলা দায়ের করেন। বিচারক সোমবার শুনানির দিন ধার্য করেন এবং ফেডারেল সরকারকে আলাউয়েহকে দেশ থেকে বের করার আগে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়ার নির্দেশ দেন। তবে, আইনজীবীরা মামলা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ায় শুনানির দিন পিছিয়ে যায়।

আদালতের নির্দেশ অমান্য করে, মার্কিন কাস্টমস ও সীমান্ত সুরক্ষা বিভাগ (CBP) আলাউয়েহকে প্যারিসের একটি ফ্লাইটে তুলে দেয়, যেখান থেকে তাকে লেবাননে ফেরত পাঠানো হয়। বিচারক লিও সোরকিন রবিবার এক বিবৃতিতে জানান, সিবিপি আদালতের নির্দেশ সম্পর্কে অবগত ছিল, কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা অধ্যাপককে দেশ থেকে বের করে দেয়।

বিচারক এর প্রতিকার চেয়েছেন এবং সিবিপিকে তাদের ঘটনার বিবরণসহ একটি আইনি জবাব দিতে বলেছেন। ব্রাউন ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। একইসঙ্গে, তারা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও অনুষদ সদস্যদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণ এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

ব্রাউন মেডিসিনের অধ্যাপক ড. জর্জ বেয়লিস এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা কেউই জানি না কেন এমনটা ঘটল।” আলাউয়েহর এই ঘটনা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গবেষকদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

বিশেষ করে, যারা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে বা কাজ করতে আগ্রহী, তাদের মধ্যে এই ঘটনার প্রভাব আরও গভীর। তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *