মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাস্কেটবল একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা। প্রতি বছর মার্চ মাসে এখানে অনুষ্ঠিত হয় ‘মার্চ ম্যাডনেস’ নামে পরিচিত একটি কলেজ বাস্কেটবল টুর্নামেন্ট।
এই টুর্নামেন্টের ফল ভবিষ্যদ্বাণী করার একটি মজার খেলা বেশ প্রচলিত আছে, যা ‘ব্র্যাকেট’ নামে পরিচিত। সম্প্রতি এই ব্র্যাকেট খেলার উদ্ভাবক কে, তা নিয়ে দুটি ভিন্ন দাবির সৃষ্টি হয়েছে।
প্রথম দাবিটি উঠেছে নিউইয়র্কের স্টেটান আইল্যান্ড এলাকার একটি বার ‘জোডিস ক্লাব ফরেস্ট’ থেকে। বারটির মালিকের দাবি, ১৯৭০-এর দশকে তারাই প্রথম এই ব্র্যাকেট খেলার প্রচলন করেন।
তাদের ধারণা ছিল, ফাইনাল ফোর দল এবং চ্যাম্পিয়ন দল নির্বাচন করে বাজি ধরলে ব্যবসার প্রসার ঘটবে। শুরুতে, দশ ডলারের বিনিময়ে এই খেলায় অংশ নেওয়া যেত এবং বিজয়ী পেতেন সামান্য কিছু অর্থ।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এর জনপ্রিয়তা বাড়ে, এবং পুরস্কারের অঙ্কও বাড়তে থাকে। একসময় এই পুরস্কারের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ১.৬ মিলিয়ন ডলারে (বর্তমান হিসাবে প্রায় ১৭ কোটি টাকার বেশি)।
অন্যদিকে, কেন্টাকি রাজ্যের এক প্রাক্তন পোস্টাল কর্মী, বব স্টিনসনের পরিবারও ব্র্যাকেট আবিষ্কারের কৃতিত্ব দাবি করেছেন।
তাদের মতে, বব ১৯৭৮ সালে পুরো টুর্নামেন্টের জন্য একটি ব্র্যাকেট তৈরি করেন। ববের ছেলে ড্যামন স্টিনসন জানিয়েছেন, তার বাবা খেলার ফল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পছন্দ করতেন।
তিনি হাতে স্কেল ও সাদা কাগজ ব্যবহার করে ব্র্যাকেট তৈরি করতেন এবং সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে অন্যদেরও এতে অংশ নিতে উৎসাহিত করতেন। বব প্রযুক্তি-বান্ধব ছিলেন।
তাই, যখন কম্পিউটার প্রোগ্রাম ‘এক্সেল’ বাজারে আসে, তখন তিনি এর মাধ্যমে ব্র্যাকেট তৈরি করা শুরু করেন এবং বন্ধুদের মাঝে তা বিতরণ করতেন।
জোডিস ক্লাব ফরেস্ট কর্তৃপক্ষ অবশ্য তাদের দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। এমনকি, তাদের বারটিতে ব্র্যাকেট খেলার কোনো স্মৃতিচিহ্নও নেই।
বার মালিকের মতে, কে প্রথম এই খেলার প্রচলন করেছে, তা নিয়ে তাদের তেমন আগ্রহ নেই।
তবে, এই দুই পক্ষের দাবির সত্যতা যাচাই করা বেশ কঠিন। এমনকি, নিখুঁতভাবে একটি ব্র্যাকেট তৈরি করাও প্রায় অসম্ভব।
ফলে, ‘মার্চ ম্যাডনেস’ ব্র্যাকেটের আসল উদ্ভাবক কে, তা হয়তো কখনোই জানা যাবে না। তবে, এটি নিশ্চিত যে, এই খেলাটি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাস্কেটবলপ্রেমীদের কাছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
অনেকটা আমাদের দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) মতো।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস