“বাথরুম ডিভোর্স”-এর ধারণা: দাম্পত্য জীবনে শান্তির নয়া দিগন্ত?
বিবাহিত জীবনে নিজেদের মধ্যে ব্যক্তিগত স্থান (personal space) বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক জীবনযাত্রায়, যেখানে নারী-পুরুষ উভয়েই কর্মব্যস্ত, সেখানে এই প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়ে যায়।
সম্প্রতি পশ্চিমা বিশ্বে একটি নতুন ধারণার জন্ম হয়েছে, যা “বাথরুম ডিভোর্স” নামে পরিচিত।
আসলে, “বাথরুম ডিভোর্স” হল দাম্পত্য জীবনে শান্তি বজায় রাখতে বাথরুমের স্থানটিকে আলাদা করে নেওয়া। এই ধারণার মূল কথা হল, স্বামী ও স্ত্রীর জন্য বাথরুমে আলাদা স্থান তৈরি করা, যেমন আলাদা বেসিন, আয়না অথবা এমনকি আলাদা টয়লেট স্থাপন করা।
অনেকের মতে, এটি “স্লিপ ডিভোর্স”-এর মতোই, যেখানে দম্পতিরা আলাদা ঘরে ঘুমানোর সিদ্ধান্ত নেন নিজেদের শান্তির জন্য।
এই ধরনের বাথরুম তৈরি করতে অনেক অর্থ খরচ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনার ডেবোরাহ উইনার তাঁর বাড়িতে যুগলদের জন্য আলাদা বেসিন এবং টয়লেট তৈরি করতে এক লক্ষ ডলারেরও বেশি খরচ করেছেন।
তাঁর মতে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের শারীরিক চাহিদাও পরিবর্তন হয়, এবং সেই কারণে বাথরুমে আলাদা স্থান তৈরি করা প্রয়োজন।
তবে, এই ধারণাটি আমাদের সংস্কৃতিতে কতটা প্রাসঙ্গিক? আমাদের দেশে সাধারণত বাথরুমের স্থান নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের মতো এত বিভাজন দেখা যায় না।
যৌথ পরিবারে বেড়ে ওঠা বা সীমিত আয়ের মানুষের কাছে বাথরুমে এত পরিবর্তন আনা হয়তো সম্ভবও নয়। তবে, ব্যক্তিগত স্থান বা প্রাইভেসি-র ধারণাটি এখানেও গুরুত্বপূর্ণ।
যদি আমরা এই বিষয়টি অন্যভাবে দেখি, তাহলে ব্যক্তিগত স্থান তৈরি করার ধারণাটি আমাদের সমাজের জন্য নতুন নাও হতে পারে। সীমিত পরিসরে, হয়তো বাথরুমের ব্যবহারের সময়সূচি তৈরি করা যেতে পারে, অথবা স্বামী-স্ত্রী তাঁদের ব্যবহারের জিনিসপত্র আলাদা রাখতে পারেন।
মূল বিষয় হল, দাম্পত্য জীবনে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং নিজেদের প্রয়োজন ও পছন্দের প্রতি মনোযোগ দেওয়া।
“বাথরুম ডিভোর্স” হয়তো আমাদের সংস্কৃতির জন্য সরাসরি প্রযোজ্য নয়, তবে এটি দাম্পত্য জীবনে শান্তি ও সম্পর্কের উন্নতির জন্য ব্যক্তিগত স্থান এবং সম্মানের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করে।
হয়তো, আমাদের সংস্কৃতিতে এই ধারণাটি ভিন্নভাবে প্রয়োগ করা যেতে পারে, যা যুগলদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian