ভেনেজুয়েলার গ্যাং সদস্যদের জন্য ত্রাসের কারাগার: এল সালভাদরে ট্রাম্পের পদক্ষেপ!

এল সালভাদরের ‘মেগা কারাগারে’ বন্দী জীবন: মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কা।

মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদরে সম্প্রতি একটি বিশাল কারাগার নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। দেশটির সরকার সন্ত্রাস দমনের উদ্দেশ্যে ‘সেন্টার ফর টেররিজম কনফাইন্মেন্ট’ (CECOT) নামে পরিচিত এই মেগা-কারাগার তৈরি করেছে, যেখানে ৪০,০০০ বন্দী রাখার ব্যবস্থা রয়েছে।

এই কারাগারে বিভিন্ন গ্যাং সদস্য ও গুরুতর অপরাধীদের রাখা হচ্ছে। সম্প্রতি, যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে অভিযুক্ত কয়েক’শ ভেনেজুয়েলীয় গ্যাং সদস্যকে এখানে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাইব বুকেলে অপরাধ দমনের নামে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছেন। সমালোচকদের মতে, বুকেলের সরকার মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করছে।

২০২২ সালে, তিনি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন, যার ফলে নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারগুলো সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। এই পদক্ষেপের পর থেকে নিরাপত্তা বাহিনী প্রায় ৮৭,০০০ মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে।

কারাগারের ভেতরের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, এখানকার বন্দীদের জীবনযাত্রা অত্যন্ত কঠিন।

তাদের সামান্যতম সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। দৈনিক প্রায় ২৩ ঘণ্টা তাদের সংকীর্ণ সেলে কাটাতে হয়, যেখানে নেই কোনো আরামের ব্যবস্থা। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ও পরিচ্ছন্নতার অভাব রয়েছে। এমনকি, তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করারও অনুমতি নেই।

যুক্তরাষ্ট্র সরকার এল সালভাদরের কারাগার ব্যবস্থাপনার জন্য ৬ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬৩ কোটি টাকা) সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে। এর বিনিময়ে তারা ভেনেজুয়েলার কুখ্যাত গ্যাং ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’-এর সদস্যদের এল সালভাদরে ফেরত পাঠাচ্ছে।

সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, তাদের কঠোর পদক্ষেপের কারণে দেশে অপরাধের হার কমেছে এবং দেশটি এখন আগের তুলনায় অনেক নিরাপদ।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এই ধরনের কঠোর নীতি মানুষের অধিকার খর্ব করছে এবং অনেক ক্ষেত্রে, নিরপরাধ ব্যক্তিদেরও আটক করা হচ্ছে।

এল সালভাদরের জননিরাপত্তা মন্ত্রী গুস্তাভো ভিলাতোরো আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সরকার সাধারণ অপরাধীদের সংশোধনে বিশ্বাসী, তবে গুরুতর অপরাধীদের জন্য কঠোর নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এল সালভাদরের এই মেগা-কারাগার এবং সেখানকার বন্দী জীবন নিয়ে মানবাধিকার সংগঠনগুলো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের আশঙ্কা, সরকারের কঠোর নীতির কারণে এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *