বৈদ্যুতিক গাড়ির (electric vehicle – EV) জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চলেছে চীনের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বিওয়াইডি (BYD)। সম্প্রতি তারা এমন একটি অত্যাধুনিক চার্জিং প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে, যা গাড়ির জ্বালানি ভরার মতোই দ্রুত সময়ে বিদ্যুতায়িত করতে সক্ষম।
এই নতুন ‘সুপার ই-প্ল্যাটফর্ম’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাত্র পাঁচ মিনিটে একটি গাড়িকে চার্জ করে প্রায় চারশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া যাবে। খবরটি এমন সময়ে এলো, যখন বিশ্বজুড়ে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বাড়ছে এবং এই বাজারে নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে প্রস্তুত হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানি।
বিওয়াইডি’র প্রতিষ্ঠাতা ওয়াং চুয়ানফু এক অনুষ্ঠানে জানান, এই নতুন চার্জিং প্রযুক্তি ১০০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত চার্জিং গতি দিতে সক্ষম। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জ দেওয়ার সময়, পেট্রোল গাড়ির জ্বালানি ভরার মতোই সংক্ষিপ্ত হবে।
বর্তমানে টেসলার সুপারচার্জারগুলো সর্বোচ্চ ৫০০ কিলোওয়াট চার্জিং গতি সরবরাহ করে। ফলে, বিওয়াইডি’র এই নতুন প্রযুক্তি টেসলার চেয়ে দ্বিগুণ দ্রুত গতিতে গাড়ি চার্জ করতে পারবে।
দ্রুত চার্জিংয়ের এই সুবিধা বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, চার্জ দেওয়ার দীর্ঘ সময় এখনো অনেক ব্যবহারকারীর কাছে উদ্বেগের কারণ।
বিওয়াইডি জানিয়েছে, তারা চীনে ৪,০০০টির বেশি অতি দ্রুত চার্জিং স্টেশন তৈরি করার পরিকল্পনা করছে। প্রাথমিকভাবে, এই নতুন চার্জিং প্রযুক্তি তাদের দুটি নতুন মডেলে পাওয়া যাবে – হান এল সেডান এবং টাং এল এসইউভি।
গাড়িগুলোর দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি হতে পারে।
বর্তমানে, বিওয়াইডি তাদের গ্রাহকদের জন্য অন্যান্য প্রস্তুতকারকদের চার্জিং স্টেশন অথবা তৃতীয় পক্ষের সরবরাহ করা পাবলিক চার্জিং পয়েন্টের ওপর নির্ভর করে। তবে, নতুন এই চার্জিং নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে তারা তাদের গ্রাহকদের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য চার্জিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চাইছে।
বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে বিওয়াইডি’র এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। গত বছর কোম্পানিটি ৪২ লক্ষ গাড়ি বিক্রি করেছে এবং চলতি বছর তাদের লক্ষ্যমাত্রা হলো ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ গাড়ি বিক্রয় করা।
বিশ্বজুড়ে পরিবেশবান্ধব গাড়ির চাহিদা বাড়ছে, সেই পরিস্থিতিতে বিওয়াইডি’র এই প্রযুক্তি নিঃসন্দেহে তাদের জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করবে।
বাংলাদেশেও সম্প্রতি বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ছে। সরকারও এই বিষয়ে উৎসাহ যুগিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত চার্জিংয়ের এই নতুন প্রযুক্তি যদি বাংলাদেশে আসে, তাহলে তা এখানকার গ্রাহকদের জন্য খুবই উপকারী হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান