ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড স্টেডিয়াম: নতুন স্টেডিয়ামের নামে আসল খেলা?

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবের নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক চলছে। প্রস্তাবিত এই স্টেডিয়াম প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২ বিলিয়ন পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় বিশাল একটি অঙ্ক।

ক্লাব কর্তৃপক্ষ বলছে, এই স্টেডিয়াম তৈরি হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, তৈরি হবে নতুন কর্মসংস্থান এবং এলাকার উন্নয়ন ঘটবে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ এই দাবির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছেন।

নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণের মূল কারণ হিসেবে অনেকে মনে করেন, এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো ক্লাবের আয় বৃদ্ধি করা। আধুনিক স্টেডিয়াম কমপ্লেক্স তৈরি করে আরও বেশি ধনী ও প্রভাবশালী দর্শকদের আকৃষ্ট করা এবং স্টেডিয়ামের ভেতরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম কেন্দ্রীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সমালোচকদের মতে, এই প্রকল্পের ফলে স্থানীয় ছোট ব্যবসা এবং শ্রমিক শ্রেণীর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

সরকার এই প্রকল্পে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগ করতে পারে বলে জানা গেছে। ক্লাব কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন স্টেডিয়াম তৈরি হলে বছরে প্রায় ৭.৩ বিলিয়ন পাউন্ড অতিরিক্ত আয় হবে এবং প্রায় ৯২ হাজার নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

এছাড়াও, ১৭ হাজার নতুন বাড়ি তৈরি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নতুন স্টেডিয়াম তৈরি হলে সব সময় যে স্থানীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে, তেমন কোনো প্রমাণ নেই। তাদের মতে, নতুন স্টেডিয়াম তৈরি করার চেয়ে বরং জনগণের মধ্যে সরাসরি অর্থ বিতরণ করা বেশি কার্যকর হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণের ফলে কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। যেমন, স্টেডিয়াম নির্মাণের সময় শ্রমিকদের মজুরি কম হতে পারে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

তাছাড়া, স্টেডিয়ামের আশেপাশে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা তৈরি হলেও, তা মূলত ক্লাবের মালিকানাধীন হওয়ার কারণে স্থানীয় জনগণের তেমন কোনো লাভ হবে না।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ক্লাবের এই প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক এখনো চলছে। অনেকের মতে, এই স্টেডিয়াম তৈরি হলে ক্লাব লাভবান হবে, কিন্তু স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার তেমন কোনো পরিবর্তন হবে না।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *