হাওয়ার্ড লুটনিকের অভিশাপ: বাণিজ্য যুদ্ধের প্রধান সেনাপতির ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক!

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড ল্যাটনিকের শুল্ক নীতির সমর্থনের কারণে বাড়ছে সমালোচনা, বাজারের অস্থিরতা নিয়ে উদ্বেগ।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড ল্যাটনিক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি, বিশেষ করে শুল্ক আরোপের জোরালো সমর্থক হিসেবে পরিচিত। কিন্তু বাজারের অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক উদ্বেগের মধ্যে তাঁর এই ভূমিকার কারণে ক্রমশ বাড়ছে সমালোচনা।

সম্প্রতি শেয়ার বাজারে দরপতন, ভোক্তাদের মধ্যে আস্থা কমে যাওয়া এবং বিশ্বজুড়ে ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ ও আয়ে কাটছাঁটের প্রস্তুতির মতো ঘটনাগুলো ল্যাটনিকের ওপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করেছে।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ল্যাটনিক প্রায়শই টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক নীতির পক্ষে জোরালোভাবে কথা বলেছেন।

তিনি প্রায়ই বলে আসছেন যে, এই নীতিগুলো আমেরিকার জন্য উপকারী হবে এবং এর ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটবে। তবে, তাঁর এই প্রচারণার ফলস্বরূপ বাজারে যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে অনেকে হতাশ।

জানা যায়, ল্যাটনিক ব্যক্তিগতভাবে ট্রাম্পের এই ধরনের হুটহাট শুল্ক আরোপের পদ্ধতিতে খুব একটা খুশি নন। তিনি মনে করেন, বাণিজ্য সম্পর্ককে আরও ভালোভাবে কাজে লাগানো যেত।

কিন্তু প্রকাশ্যে তিনি সবসময় ট্রাম্পের নীতির পক্ষে থেকেছেন, যা অনেকের কাছে কিছুটা অপ্রত্যাশিত।

ল্যাটনিকের উত্থানও বেশ চমকপ্রদ। তিনি ওয়াল স্ট্রিটের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন এবং ট্রাম্পকে ব্যক্তিগতভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ সাহায্য করেছেন।

এই ঘনিষ্ঠতার সুবাদেই তিনি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসেন। শুরুতে তিনি ট্রেজারি সেক্রেটারি হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাণিজ্য সচিবের দায়িত্ব পান।

হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাণিজ্য সচিব এবং প্রশাসনের অন্য সদস্যরা সবাই মিলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছেন।

তাঁরা মনে করেন, এই নীতির ফলে আমেরিকান জনগণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে।

তবে, ল্যাটনিকের এই ভূমিকার কারণে প্রশাসনের অভ্যন্তরেও বিভেদ তৈরি হয়েছে বলে শোনা যায়। কিছু কর্মকর্তার মতে, বাণিজ্য সচিবের অতি উৎসাহী মনোভাব অনেক সময় বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয় না।

কেউ কেউ মনে করেন, এই পরিস্থিতিতে ল্যাটনিকের পরিবর্তে অভিজ্ঞ বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ রবার্ট লাইটহাইজার-এর মতো ব্যক্তির প্রয়োজন ছিল, যিনি বাজারের পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে বুঝতে পারতেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক নীতি বিশ্ব বাণিজ্যকে নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

এর ফলে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, ল্যাটনিকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *