গাজায় ইসরায়েলের বোমা: শিশুদের আর্তনাদ, ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষ!

গাজায় আবারও ইসরায়েলি বিমান হামলা, রমজানে বিপর্যস্ত জনজীবন।

গাজা সিটি থেকে: রমজান মাসের শুরুতেই গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা নতুন করে সেখানকার মানুষের জীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। গভীর রাতে হওয়া এই হামলায় ঘরবাড়ি, শরণার্থী শিবির এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ফিলিস্তিনের এই অঞ্চলের মানুষজন বলছেন, তারা যেন এক দুঃস্বপ্নের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মধ্যরাতের পর হঠাৎ করেই বিকট শব্দে ঘুম ভাঙে তাদের। আকাশ থেকে একের পর এক বোমা এসে পড়তে থাকে।

আতঙ্কে মানুষজন ছোটাছুটি শুরু করে এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে বহু মানুষ।

আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সের সংকট দেখা দেয়।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানাচ্ছে, দেইর আল-বালাহ, নুসেইরাত, খান ইউনিস, রাফাহ সহ বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালানো হয়। আবাসিক ভবন ও উদ্বাস্তু শিবিরগুলোও রেহাই পায়নি।

হামলায় একটি পুরো আবাসিক ভবন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। গাজার উত্তরাঞ্চলে জাবালিয়া এবং আল-কারামা এলাকাতেও বোমা বর্ষণ করা হয়েছে।

হামলার পর পরই জরুরি বিভাগের কর্মীরা ছুটে যান এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওগুলোতে ধ্বংসের ভয়াবহতা ফুটে উঠেছে। হাসপাতালে আহতদের আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আহতদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। হাসপাতালগুলোতে জায়গা সংকট দেখা দিয়েছে।

এর আগে যুদ্ধবিরতি চলায় সেখানকার মানুষ কিছুটা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু নতুন করে এই হামলা তাদের মনে গভীর আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

গাজায় বসবাসকারী একজন নারী জানান, “যুদ্ধবিরতির সময় আমরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, হয়তো আবার সবকিছু স্বাভাবিক হবে।

কিন্তু এখন আবার সেই পুরোনো ভয়, অনিশ্চয়তা আমাদের গ্রাস করেছে।” তিনি আরও বলেন, “রমজানে পরিবারের সঙ্গে ইফতারের পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু এখন তো কিছুই করার উপায় নেই।

ইসরায়েল সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি বাতিল করে গাজায় সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করেছে।

গাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা সেখানকার সাধারণ মানুষের জীবনে চরম দুর্ভোগ ডেকে আনবে।

উদ্বাস্তু শিবিরগুলোতে খাদ্য ও পানির সংকট দেখা দিতে পারে। স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *