আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) প্রেসিডেন্ট হিসেবে টমাস বাখের বিদায় আসন্ন। ১২ বছরের এই দীর্ঘ সময়ে তিনি ক্রীড়াঙ্গনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সাক্ষী ছিলেন।
সম্প্রতি, এক সাক্ষাৎকারে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, যেখানে উঠে এসেছে খেলার মাঠকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার প্রয়োজনীয়তা।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিভেদের এই সময়েও বাখ মনে করেন, অলিম্পিক গেমস-এর মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হওয়া উচিত নয়।
তাঁর মতে, খেলাধুলা সবসময়ই একটি ঐক্যের প্রতীক, যা বিশ্বকে একত্রিত করতে পারে। প্যারিস অলিম্পিকে বিভিন্ন দেশের খেলোয়াড়দের একসঙ্গে অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল, এমনকি ইয়েমেনের মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোর খেলোয়াড়দেরও একসঙ্গে দেখা গেছে, যা শান্তির বার্তা দেয়।
তবে বাখের এই বার্তা সামনের দিনগুলোতে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে পারে।
২০২৮ সালের অলিম্পিক গেমস-এর আসর বসতে যাচ্ছে লস অ্যাঞ্জেলেসে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট বেশ অস্থির। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে এই গেমস-এর আয়োজন নিয়ে বাখ বেশ আশাবাদী ছিলেন।
তিনি মনে করেন, ট্রাম্প খেলাধুলাকে ভালোবাসেন এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে গেমস আয়োজনে সমর্থন দেবেন।
ট্রাম্পের সময়ে খেলোয়াড়দের নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছিল।
বিশেষ করে, ট্রান্সজেন্ডার নারী ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণের বিষয়টি বেশ আলোচনার জন্ম দেয়।
বাখ মনে করেন, খেলাধুলায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সবার নিয়ম-কানুন মেনে চলা উচিত।
বাখের সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ একটি বড় ঘটনা।
২০১৪ সালের সোচি শীতকালীন অলিম্পিকে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মদদে ডোপিংয়ের অভিযোগ ওঠে।
এরপর রাশিয়াকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আসর থেকে নিষিদ্ধ করা হয়।
বাখের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভালো সম্পর্ক ছিল, তবে ডোপিং কেলেঙ্কারি এবং ইউক্রেন আক্রমণের পর সেই সম্পর্কে চিড় ধরে।
বাখ বলেন, বর্তমানে রাশিয়ায় তাঁকে নাৎসি বলা হয়।
বিদায় বেলায় বাখ মনে করেন, অলিম্পিকের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীল রাখতে খেলাধুলার উন্নয়ন ও সংস্কার জরুরি।
তিনি মনে করেন, খেলোয়াড়দের স্বার্থকে সবার উপরে স্থান দিতে হবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন