গুগল-এর মূল কোম্পানি অ্যালফাবেট, সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান উইজ-কে প্রায় ৩ হাজার ২শ’ কোটি মার্কিন ডলারে কিনে নিচ্ছে। প্রযুক্তি বিশ্বে এটাই অ্যালফাবেটের সবচেয়ে বড় চুক্তি।
ইসরায়েলি স্টার্টআপ উইজ-কে কিনে নেওয়ার মাধ্যমে গুগল তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মাইক্রোসফট ও অ্যামাজনের সঙ্গে ক্লাউড সেবার বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করতে চাইছে।
উইজ মূলত ক্লাউড নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে। তারা অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস (AWS) ও মাইক্রোসফট অ্যাজ্যুর-এর মতো ক্লাউড স্টোরেজ সরবরাহকারীদের ডেটা স্ক্যান করে নিরাপত্তা ঝুঁকি খুঁজে বের করে।
গত বছর গ্রীষ্মকালে, অ্যালফাবেট ২৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে উইজ-কে কিনতে চেয়েছিল, কিন্তু উইজ সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক এই স্টার্টআপটি ইসরায়েলি ইন্টেলিজেন্স কর্পস’র ‘ইউনিট ৮২০০’ এর প্রাক্তন কর্মীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তাদের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে সেকোইয়া এবং থ্রাইভ-এর মতো ভেঞ্চার ক্যাপিটাল firm।
উইজ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, আসাফ র্যাপাপোর্ট, অ্যালফাবেটের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার সময় বলেছিলেন, তারা শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে নিজেদের ব্যবসার আরও প্রসার ঘটাতে আগ্রহী।
যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ও ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান ওয়েডবুশ-এর বিশ্লেষক ড্যান আইভস বলেছেন, “উইজ এখন প্রধান তথ্য কর্মকর্তাদের (CIO) কাছে সুপরিচিত একটি নাম।
তাদের শক্তিশালী ক্লাউড নিরাপত্তা প্ল্যাটফর্ম এবং গ্রাহক ভিত্তি রয়েছে, যা ১ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজারের দিকে নজর রাখছে। গুগলের জন্য, এটি বিশেষ করে মাইক্রোসফট ও অ্যামাজনের মতো বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি সতর্কবার্তা, যা তাদের ক্লাউড সেবার পরিপূরক হিসেবে সাইবার নিরাপত্তা খাতে বড় ধরনের বিনিয়োগের ইঙ্গিত দেয়।”
উইজ জানিয়েছে, তাদের বার্ষিক আয় প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার। ওয়েডবুশ-এর অনুমান, গুগলের বিশাল বাজার এবং বিশ্বব্যাপী কার্যক্রমের সুবাদে আগামী বছরগুলোতে এই ব্যবসা ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ক্লাউড প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের প্রেক্ষাপটে, সাইবার নিরাপত্তার গুরুত্ব বাড়ছে, যা এই চুক্তির প্রধান কারণ।
বাংলাদেশেও বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ক্লাউড সেবার ব্যবহার বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে, গুগলের এই পদক্ষেপ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। উইজের নিরাপত্তা প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এখানকার প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ডেটা সুরক্ষিত করতে পারবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান