টেকসই পর্যটনে নতুন দিগন্ত: ২০২৩ সালের ‘গ্লোবাল ভিশন অ্যাওয়ার্ড’ বিজয়ীদের তালিকা প্রকাশ করলো ‘ট্রাভেল + লেজার’। বিশ্বজুড়ে পরিবেশ-বান্ধব এবং টেকসই পর্যটনের অগ্রদূতদের সম্মানিত করতে প্রতি বছর ‘গ্লোবাল ভিশন অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করে ‘ট্রাভেল + লেজার’।
এই বছর, ২০২৫ সালের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে ২৫টি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই বিজয়ীরা পর্যটনকে আরও দায়িত্বশীল করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছেন এবং তাদের উদ্ভাবনী ধারণাগুলো বিশ্বজুড়ে ভ্রমণকারীদের জন্য নতুন দ্বার উন্মোচন করছে।
এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য বিশেষজ্ঞ প্যানেল বিভিন্ন কোম্পানি, গন্তব্য এবং ব্যক্তিদের মনোনয়ন দিয়েছেন, যারা পর্যটন খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনছেন। পর্যটকদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে উন্নত করতে এবং পরিবেশের উপর এর প্রভাব কমাতে তাদের উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
এই বছর, বিজয়ীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উদ্যোগ হলো:
- যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার ‘লিটল সেন্ট সিমন্স আইল্যান্ড’: উপকূলীয় অঞ্চলের সংরক্ষণ এবং পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে দ্বীপটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এখানে আগত পর্যটকদের প্রকৃতি এবং পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।
- ‘লিডিং হোটেলস অফ দ্য ওয়ার্ল্ড’: পরিবেশ-বান্ধব হোটেলগুলোকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করতে ‘সাসটেইনেবল লিডার্স’ নামে একটি সংগ্রহ তৈরি করেছে এই সংস্থা। এই উদ্যোগের মাধ্যমে জল ব্যবহার কমানো, শক্তির ব্যবহার উন্নত করা এবং স্থানীয় সংস্কৃতির প্রতি সম্মান জানানো হয়।
- ফ্লোরিডার ‘মেরি সেলবি বোটানিক্যাল গার্ডেনস’: টেকসই স্থাপত্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো এই স্থানটি। এখানে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয় এবং বৃষ্টির জল সংরক্ষণের জন্য অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে।
- ভারতের ‘লিলা প্যালেসেস, হোটেলস অ্যান্ড রিসোর্টস’: ফুলের বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অভিনবত্ব দেখিয়ে এই হোটেল গ্রুপটি। তারা ফুলের পাপড়ি থেকে সুগন্ধি ধূপ তৈরি করে যা অতিথিদের উপহার হিসেবে দেওয়া হয়।
- নেদারল্যান্ডসের ‘ক্যাবিনার’: প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে ইচ্ছুক পর্যটকদের জন্য টেকসই উপাদানে তৈরি আরামদায়ক কুটির সরবরাহ করে এই সংস্থা।
- সাও টোমে ও প্রিন্সিপির ‘এইচবিডি প্রিন্সিপ’: এই দ্বীপপুঞ্জে পরিবেশ-বান্ধব পর্যটন এবং কৃষিকাজের মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতির উন্নতিতে কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠান।
এছাড়াও, মেক্সিকোর ‘জার্নি মেক্সিকো’ পর্যটকদের কাছ থেকে একটি ‘দায়িত্বশীল ভ্রমণ ফি’ সংগ্রহ করে যা স্থানীয় কমিউনিটির উন্নয়নে ব্যয় করা হয়। আলাস্কার ‘আইসি স্ট্রেট পয়েন্ট’ স্থানীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরে পর্যটকদের আকর্ষণ করে এবং আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তা করে।
‘গিভিং ব্যাগ’ হোটেলের বর্জ্য কমাতে ব্যবহৃত জিনিসপত্র স্থানীয় দাতব্য সংস্থায় দান করার ব্যবস্থা করে। তানজানিয়ার ‘এক্সোডাস অ্যাডভেঞ্চার ট্রাভেলস’ পর্যটকদের বৈজ্ঞানিক গবেষণায় অংশ নিতে উৎসাহিত করে এবং নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে।
পর্যটনকে টেকসই করতে এবং পরিবেশের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব কমাতে এই অ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের কাজগুলো নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের এই দৃষ্টান্তগুলো অনুসরণ করে বাংলাদেশও তার পর্যটন খাতে নতুনত্ব আনতে পারে।
স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে, পরিবেশ-বান্ধব উপায়ে পর্যটনকে উৎসাহিত করা গেলে তা দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য উপকারী হবে।
এই নিবন্ধটি ‘ট্রাভেল + লেজার’ কর্তৃক প্রদত্ত ২০২৩ সালের গ্লোবাল ভিশন অ্যাওয়ার্ডের তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।