ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তাহলে তিনি দেশটির বিচার বিভাগে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারেন। একটি প্রগতিশীল সংগঠন ‘ডিমান্ড জাস্টিস’-এর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ট্রাম্প সম্ভবত তিনশোর বেশি রক্ষণশীল বিচারক নিয়োগ করতে পারেন, যা আদালতের ভারসাম্যকে নতুন করে সাজিয়ে দেবে।
খবরটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন মার্কিন আদালতগুলো এরই মধ্যে ব্যাপক চাপের মধ্যে রয়েছে।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ট্রাম্পের সময়ে বিদ্যমান অথবা ভবিষ্যতে শূন্য হতে যাওয়া বিচারকের পদ রয়েছে ৫৪টি। এছাড়াও, অনেক ফেডারেল বিচারক নির্দিষ্ট বয়স ও চাকরির শর্ত পূরণ করার পর ‘সিনিয়র স্ট্যাটাস’ নিতে পারেন, যার ফলে তারা কাজের চাপ কমিয়ে পূর্ণ বেতন পান।
এই ‘সিনিয়র স্ট্যাটাস’ নেওয়ার কারণে সৃষ্ট শূন্যপদ পূরণ করারও সুযোগ পাবেন প্রেসিডেন্ট। ‘ডিমান্ড জাস্টিস’-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০২৮ সালের শেষ নাগাদ প্রায় ২৫০ জন বিচারক এই ‘সিনিয়র স্ট্যাটাস’-এর জন্য যোগ্য হবেন।
সংগঠনটি সতর্ক করে বলেছে, ট্রাম্পের এই ধরনের বিচারক নিয়োগের ফলে মেডিকেড বাতিল, সামাজিক নিরাপত্তা বিলোপ, পরিবেশ সুরক্ষা দুর্বল করা, এবং এমনকি সামরিক বাহিনীর সুযোগ-সুবিধা কমানোর মতো বিষয়গুলো আরও দৃঢ় হতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, ট্রাম্প সম্প্রতি ফ্লোরিডার বিচারক আইলিন ক্যাননের প্রশংসা করেছেন, যিনি তার বিরুদ্ধে গোপন নথি সংক্রান্ত একটি মামলায় ট্রাম্পের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন।
‘ডিমান্ড জাস্টিস’ বর্তমানে শূন্যপদগুলো, সিনিয়র স্ট্যাটাসের জন্য যোগ্য বিচারক এবং কোন দল কতজন বিচারক নিয়োগ দিয়েছে, সেই সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করছে। তারা একটি ইন্টারেক্টিভ মানচিত্র তৈরি করছে, যেখানে ফেডারেল আপিল আদালত এবং জেলা আদালতগুলোতে কোন দল কতজন বিচারক নিয়োগ দিয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে।
তবে, উদ্বেগের বিষয় হলো, ডেমোক্রেটিক পার্টি এখনো ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপ মোকাবিলায় একটি সুসংহত কৌশল তৈরি করতে পারেনি। সম্প্রতি এক জনমত জরিপে ডেমোক্রেটিক পার্টির জনপ্রিয়তা সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
‘ডিমান্ড জাস্টিস’-এর অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাহী পরিচালক ম্যাগি জো বুকানান বলেছেন, “ট্রাম্প প্রশাসন এবং কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যরা এই সাংবিধানিক সংকটের জন্য দায়ী। আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে, নির্বাচিত প্রত্যেক প্রতিনিধি আমাদের বিচার বিভাগকে রক্ষা করতে এবং গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে কাজ করবেন।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমেরিকার জনগণের এমন সাহসী নেতৃত্ব দরকার, যারা আমাদের মৌলিক অধিকারের জন্য লড়াই করবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান