জার্মানির পার্লামেন্ট ‘সামরিক শক্তি বৃদ্ধি’ এবং অবকাঠামো খাতে বিশাল বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে একটি বড় আকারের ব্যয় প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এই পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো দেশটির সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে সম্ভাব্য রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া।
মঙ্গলবার (গতকাল) দেশটির আইনপ্রণেতারা ৫০০ বিলিয়ন ইউরোর (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৫৯ লাখ কোটি টাকার সমান) একটি তহবিল তৈরির পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
এই ব্যয়ের অনুমোদন আসে এমন এক সময়ে, যখন রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। প্রস্তাবিত এই তহবিল ব্যবহারের মাধ্যমে জার্মানি তার সামরিক সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর পাশাপাশি, দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো খাতেও এই অর্থ বিনিয়োগ করা হবে।
জার্মানির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগে ভোটাভুটিতে প্রস্তাবের পক্ষে ৫১৩ জন এবং বিপক্ষে ভোট দেন ২০৭ জন সংসদ সদস্য। প্রস্তাবটি পাস হওয়ার জন্য কমপক্ষে ৪৮৯ ভোটের প্রয়োজন ছিল।
এই বিল পাস করার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন জোট সরকার এবং বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য দেখা গেছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রাইডরিশ মের্ৎস বলেছেন, এই পদক্ষেপের প্রধান কারণ হলো ‘ইউরোপের বিরুদ্ধে পুতিনের যুদ্ধ’। তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে জার্মানিতে বিভিন্ন ধরনের নাশকতামূলক কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ করেছেন।
এর মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে হামলা, অগ্নিসংযোগ, গুপ্তচরবৃত্তি এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানো। মের্ৎস আরো উল্লেখ করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বিভক্ত ও দুর্বল করারও চেষ্টা চলছে।
এই বিশাল ব্যয়ের পরিকল্পনা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এটি দেশের ওপর ঋণের বোঝা বাড়িয়ে দেবে। তবে মের্ৎস বলেছেন, জার্মানির এখন নতুন বাস্তবতাকে মেনে নিতে হবে।
তার মতে, জার্মানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সামরিক সক্ষমতা বাড়ানো অপরিহার্য।
জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই তহবিল ব্যয়ের ফলে দেশটির অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ জার্মানিকে মন্দা থেকে উত্তরণে সাহায্য করবে এবং ইউরোজোনের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।
এই বিলটি এখন বুন্ডেসরাটে (Bundesrat) যাবে, যা জার্মানির ১৬টি রাজ্যের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা। সেখানে অনুমোদন পাওয়ার পর এটি আইনে পরিণত হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান