যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কর্তৃক বরখাস্ত হওয়া প্রায় ২৫ হাজার কর্মীকে পুনরায় কাজে বহাল করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সম্প্রতি এক মামলার রায়ে আদালত এই নির্দেশ দেন। জানা গেছে, ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন বিভাগে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তটি সম্ভবত অবৈধ ছিল, এমন যুক্তিতে বিচারক এই রায় দেন।
আদালতের নথিতে জানানো হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরখাস্ত হওয়া কর্মীদের পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তর তাদের কর্মীদের সাময়িকভাবে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠাচ্ছে। ফেডারেল কর্মীদের ছাঁটাইয়ের এই ব্যাপক প্রক্রিয়াটি সরকারের কর্মদক্ষতা বাড়ানোর বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ ছিল। এই পরিকল্পনার নেতৃত্বে ছিলেন একজন খ্যাতনামা বিলিওনেয়ার ব্যবসায়ী।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া এই কর্মী ছাঁটাই কার্যক্রম ফেডারেল কর্মচারীদের বরখাস্ত করার নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। সাধারণত, ফেডারেল সরকারের ‘প্রবেশনারি কর্মী’ হিসেবে পরিচিত, এক বছরের কম সময়ের জন্য কর্মরত কর্মীদের এই ছাঁটাইয়ের আওতায় আনা হয়েছিল। যদিও এদের মধ্যে কেউ কেউ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি চাকরি করছিলেন।
মার্কিন বিচারক জেমস ব্রেডার ১৩ই মার্চ এই রায় দেন। ১৯টি ডেমোক্রেট-নিয়ন্ত্রিত রাজ্য এবং ওয়াশিংটন ডিসি এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। রাজ্যগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, একসঙ্গে এত কর্মী ছাঁটাই হলে বেকারত্বের হার বাড়বে এবং এর ফলে সামাজিক পরিষেবাগুলোর ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে।
মার্কিন বিচার বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৭,৬০০ জন কর্মী ট্রেজারি বিভাগ থেকে, ৫,৭০০ জন কৃষি বিভাগ থেকে এবং ৩,২০০ জনের বেশি স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা বিভাগ থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন। তবে, কর্মী পুনর্বহালের এই প্রক্রিয়াটি বিভিন্ন বিভাগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। কর্মকর্তাদের মতে, বিপুল সংখ্যক কর্মীকে ফিরিয়ে আনার কারণে প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হয়েছে।
মার্কিন বিচার বিভাগের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সহকারী সচিব মার্ক গ্রিন এক নথিতে উল্লেখ করেছেন, আদালতের শুনানির সময়সূচির সঙ্গে কাজের সময়সূচি বাঁধা হয়ে যাওয়ায় কর্মকর্তাদের কাজ পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে এবং আদালতের সিদ্ধান্ত স্থগিত করার জন্য আবেদন জানিয়েছে। আদালত আগামী ২৬শে মার্চ শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেছেন এবং এই মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হতে কয়েক মাস বা তার বেশি সময় লাগতে পারে।
তথ্য সূত্র: The Guardian