মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা সারেপটা থেরাপিউটিকস-এর তৈরি করা একটি জিন থেরাপি চিকিৎসার সময় এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ‘এলেভিডিস’ নামের এই চিকিৎসাটি পেশী দুর্বলতাজনিত রোগ, ‘ডুশেন মাসকুলার ডিসট্রফি’ (Duchenne muscular dystrophy) -এর বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
রোগীর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই কোম্পানির শেয়ারের দামে বড় পতন দেখা গেছে।
ডুশেন মাসকুলার ডিসট্রফি একটি বিরল এবং মারাত্মক রোগ, যা প্রধানত ছেলেদের মধ্যে দেখা যায়। এই রোগে আক্রান্তদের পেশি ধীরে ধীরে দুর্বল হতে থাকে এবং এক সময়ে তারা হাঁটাচলার ক্ষমতা হারায়।
অনেক ক্ষেত্রে অল্প বয়সেই তাদের মৃত্যু হয়। ‘এলেভিডিস’ হল এই রোগের চিকিৎসার জন্য তৈরি হওয়া একটি নতুন ধরনের জিন থেরাপি।
এই থেরাপিতে ত্রুটিপূর্ণ জিনের পরিবর্তে রোগীর শরীরে সুস্থ জিন প্রবেশ করানো হয়।
২০২৩ সালে, খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (Food and Drug Administration বা FDA) এই চিকিৎসার অনুমোদন দেয়। যদিও কিছু বিশেষজ্ঞ এর কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, তবুও রোগীদের সুবিধার কথা ভেবে এটি দ্রুত অনুমোদন করা হয়।
বর্তমানে, এই থেরাপিটি যাদের বয়স চার বছর বা তার বেশি, তাদের জন্য উপলব্ধ। আগে এটি শুধুমাত্র অল্পবয়সী, যারা এখনো হাঁটতে পারে, তাদের জন্য সীমাবদ্ধ ছিল।
এই চিকিৎসার জন্য একবারের খরচ প্রায় ৩.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ প্রায় ৩৫ কোটি টাকার বেশি।
কোম্পানি জানিয়েছে, যে রোগীর মৃত্যু হয়েছে, তার শরীরে সম্ভবত সম্প্রতি কোনো সংক্রমণ হয়েছিল, যা লিভারের ক্ষতিতে অবদান রেখেছিল। ‘এলেভিডিস’-এর প্রেসক্রিপশন সংক্রান্ত তথ্যে এই ঘটনার উল্লেখ করার পরিকল্পনা করছে তারা।
রোগীর মৃত্যুর খবর আসার পর, বাজারে সারেপটা থেরাপিউটিকস-এর শেয়ারের দাম ২৩ শতাংশের বেশি কমে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের কেমব্রিজ শহরে অবস্থিত এই কোম্পানিটির শেয়ারের দর এখন প্রতি শেয়ারে প্রায় ৭৮ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, সারেপটা ২০১৬ সাল থেকে ডুশেন মাসকুলার ডিসট্রফির চিকিৎসার জন্য আরও তিনটি ওষুধের অনুমোদন পেলেও, এখনো পর্যন্ত সেগুলোর কার্যকারিতা সম্পূর্ণরূপে প্রমাণিত হয়নি। বর্তমানে, এই ওষুধগুলোর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য গবেষণা চলছে।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস