গুগল কিনছে সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা উইজ, যা গুগলের ইতিহাসে বৃহত্তম চুক্তি
বিশ্বজুড়ে তথ্যপ্রযুক্তি বাজারে নিজেদের প্রভাব আরও বাড়াতে চলেছে গুগল। সম্প্রতি, সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা উইজ-কে (Wiz) প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলারে কিনে নিতে রাজি হয়েছে টেক জায়ান্টটি।
প্রযুক্তি জগতে গুগলের ২৬ বছরের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় চুক্তি। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence – এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসারের যুগে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের (Cloud Computing – মেঘ পরিষেবা) চাহিদা বাড়ছে, আর এই সুযোগটি কাজে লাগাতে চাইছে গুগল।
ক্লাউড কম্পিউটিং খাতে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করতে গুগল এই পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমানে, গুগল তার বার্ষিক আয়ের সিংহভাগ আসে বিজ্ঞাপন এবং সার্চ ইঞ্জিন থেকে।
তবে, এআই-এর উত্থানের সাথে সাথে ক্লাউড বিভাগটি গুগলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হয়েছে। গত বছর, গুগলের ক্লাউড বিভাগের আয় ছিল প্রায় ৪৩.২ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ৬৪ শতাংশ বেশি।
উইজ মূলত ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এটি ক্লাউড নিরাপত্তা সরঞ্জাম তৈরি করে। ছোট স্টার্টআপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি সংস্থাসহ বহু ক্লায়েন্ট রয়েছে তাদের।
উইজ এবং গুগল ক্লাউড উভয়ই বিশ্বাস করে যে ক্লাউড নিরাপত্তা আরও সহজলভ্য, আরও বুদ্ধিমান এবং সবার জন্য উন্মুক্ত হওয়া উচিত, যাতে আরও বেশি সংস্থা নিরাপদে ক্লাউড ও এআই ব্যবহার করতে পারে।
গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই এক বিবৃতিতে বলেছেন গুগল ক্লাউড এবং উইজ একসঙ্গে “ক্লাউড নিরাপত্তা আরও উন্নত করবে এবং একাধিক ক্লাউড ব্যবহারের ক্ষমতা বাড়াবে”।
বিশ্লেষকদের মতে, এই চুক্তি ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে গুগলকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে আসবে, বিশেষ করে মাইক্রোসফট ও অ্যামাজনের (Amazon) মতো প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এটি গুগলের জন্য সহায়ক হবে।
তবে, এই চুক্তিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই সম্ভবত ২০২৬ সাল নাগাদ এই চুক্তি সম্পন্ন হবে।
গুগল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, উইজের পণ্যগুলো অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস, মাইক্রোসফট অ্যাজুর এবং ওরাকল ক্লাউডসহ অন্যান্য নিরাপত্তা অংশীদারদের সঙ্গেও কাজ করতে থাকবে।
অন্যদিকে, এই চুক্তির ফলে বাজারে বিদ্যমান অন্যান্য সাইবার নিরাপত্তা প্রদানকারীদের উপর কী প্রভাব পড়বে, সে বিষয়েও অ্যান্টিট্রাস্ট বিষয়ক সংস্থাগুলোর কড়া নজর থাকবে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস