মাইকেল জ্যাকসন: ‘লিভিং নেভারল্যান্ড ২’-এ ভয়ংকর সত্য ফাঁস!

**মাইকেল জ্যাকসন বিতর্ক: ‘লিভিং নেভারল্যান্ড ২’ – অভিযোগ ও আইনি লড়াইয়ের কাহিনি**

নব্বইয়ের দশকে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করা পপ তারকা মাইকেল জ্যাকসনের বিরুদ্ধে শিশুদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে তৈরি হয়েছিল তথ্যচিত্র ‘লিভিং নেভারল্যান্ড’। সেই তথ্যচিত্রের ধারাবাহিকতা হিসেবে সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ‘লিভিং নেভারল্যান্ড ২: সারভাইভিং মাইকেল জ্যাকসন’।

এই নতুন তথ্যচিত্রে মূলত আলোকপাত করা হয়েছে, মূল অভিযোগকারী ওয়েড রবস ও জেমস সেফচাকের জীবন এবং জ্যাকসনের মৃত্যুর পর তাদের আইনি লড়াইয়ের ওপর।

‘লিভিং নেভারল্যান্ড’-এর প্রথম অংশে, ওয়েড রবস এবং জেমস সেফচাক, দুজনেই মাইকেল জ্যাকসনের বিরুদ্ধে শিশুদের যৌন নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ আনেন।

তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, জ্যাকসন শিশুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করতেন এবং তাদের ওপর যৌন নির্যাতন চালাতেন।

এই অভিযোগগুলো সারা বিশ্বে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয় এবং জ্যাকসনের ভাবমূর্তিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছিল।

নতুন তথ্যচিত্রটিতে দেখানো হয়েছে, ২০১৩ সালে রবস প্রথম মার্কিন টেলিভিশনে এসে এই অভিযোগ করেন।

এরপর শুরু হয় তাদের আইনি লড়াই।

জ্যাকসনের মৃত্যুর কারণে এই মামলা আরও জটিল হয়ে ওঠে।

অভিযোগ প্রমাণ করতে তাদের বেশ বেগ পেতে হয়, কারণ ঘটনার দীর্ঘ সময় পর তারা মুখ খুলেছিলেন।

তাছাড়া, জ্যাকসনের বিশাল খ্যাতি এবং প্রভাবশালী মহলের কারণেও তাদের প্রতিকূলতার শিকার হতে হয়।

তথ্যচিত্রে দেখা যায়, রবস এবং সেফচাককে মামলার শুনানিতে বিভিন্ন আইনি যুক্তিতর্কের মোকাবিলা করতে হয়েছে।

এমনকি, জ্যাকসনের সম্পত্তির মালিকানা নিয়েও জটিলতা সৃষ্টি হয়।

তথ্যচিত্রটিতে আরও দেখানো হয়, কীভাবে ‘লিভিং নেভারল্যান্ড’-এর মুক্তি পাওয়ার পর জ্যাকসনের সমর্থক ও কিছু গণমাধ্যম তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়।

রবস এবং সেফচাকের চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয়, যা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

তথ্যচিত্রটিতে, ওপ্রাহ উইনফ্রের সঞ্চালনায় একটি অনুষ্ঠানে রবস ও সেফচাকের সাক্ষাৎকারও দেখানো হয়।

ওপ্রাহ নিজেও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন, তাই তিনি তাদের সাহস জুগিয়েছেন এবং সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছেন।

তবে, ‘লিভিং নেভারল্যান্ড ২’ তৈরি করতে গিয়ে নির্মাতাদের কিছু সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হতে হয়েছে।

মূল তথ্যচিত্রে নির্যাতনের শিকার শিশুদের মানসিক অবস্থা, তাদের পরিবার এবং সমাজের প্রতিক্রিয়ার মতো বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছিল।

ফলে, নতুন তথ্যচিত্রে সেই বিষয়গুলো নতুন করে বলার সুযোগ সীমিত ছিল।

বর্তমানে, রবস ও সেফচাকের মামলাটি আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।

যদিও প্রাথমিকভাবে তাদের অভিযোগ খারিজ হয়ে গিয়েছিল, তবে তারা আপিল করেছেন।

তথ্যচিত্রের মাধ্যমে, নির্যাতন শিকারদের কথা বলার সুযোগ তৈরি হওয়ায়, আইনের কিছু পরিবর্তন হয়েছে, যা তাদের আপিলে সাহায্য করতে পারে।

জানা গেছে, এই মামলার চূড়ান্ত শুনানি সম্ভবত ২০২৬ সালে অনুষ্ঠিত হবে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *