ছোট হয়ে আসছে বিমানের আসন: যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে?
বিমান ভ্রমণে স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে। উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারক এবং বিমান সংস্থাগুলো মুনাফা বাড়ানোর লক্ষ্যে যাত্রী আসনের জায়গা ক্রমাগতভাবে কমিয়ে আনছে।
ফলে, আন্তর্জাতিক রুটে ভ্রমণকারী যাত্রীদের জন্য এটি এক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যাত্রীদের বসার জায়গার মাপ বা সিট পিচ (seat pitch)-এর দিকে তাকালে বিষয়টি স্পষ্ট হয়। সাধারণত, একটি সিটের সামনের অংশ থেকে পেছনের অংশের দূরত্বকে সিট পিচ বলা হয়।
সম্প্রতি, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা গেছে, অনেক এয়ারলাইন্সে এই স্থান সংকুচিত হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ভার্জিন আটলান্টিক এয়ারলাইন্সের ইকোনমি ক্লাসে সিট পিচ ৩০-৩১ ইঞ্চি।
ব্রিটিশ এয়ারওয়েজেও এই মাপ ৩১ ইঞ্চি। যেখানে এমিরেটস এবং সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের মতো কিছু এয়ারলাইন্সে এখনোও ৩২ থেকে ৩৪ ইঞ্চি পর্যন্ত জায়গা পাওয়া যায়।
শুধু সিট পিচই নয়, সিটের প্রস্থও কমছে। এয়ার কানাডার নতুন ‘স্লিমলাইন’ সিটগুলোতে সিটের প্রস্থ ১৮.৫ ইঞ্চি থেকে কমিয়ে ১৭ ইঞ্চি করা হয়েছে।
যাত্রী সাধারণের গড় উচ্চতা এবং ওজনের কথা বিবেচনা করলে এই ধরনের পদক্ষেপ বেশ উদ্বেগের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত ওজনের কারণে অনেক যাত্রীকেই এখন দুটি সিট বুক করতে হয়।
এতে করে টিকিটের অতিরিক্ত দাম গুণতে হয়, যা সাধারণ মানুষের জন্য বেশ কষ্টকর।
২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি মানুষ অতিরিক্ত ওজন অথবা স্থূলতার শিকার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিমানের আসনের স্থান আরো সংকুচিত হলে যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি আরও বাড়বে।
বর্তমানে, অনেক বাংলাদেশি যাত্রী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুটে নিয়মিত ভ্রমণ করেন। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকাগামী ফ্লাইটে তাদের আনাগোনা উল্লেখযোগ্য।
আসন সংকটের কারণে তাদের ভ্রমণের অভিজ্ঞতা অনেক সময় কষ্টকর হয়ে ওঠে। বিমান সংস্থাগুলোর এই ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে যাত্রীদের আরাম এবং স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি ক্রমশ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
যাত্রীদের আরামের কথা বিবেচনা করে বিমান সংস্থাগুলোর আসন বিন্যাসে পরিবর্তন আনা উচিত। সেই সঙ্গে, টিকিটের মূল্যের সঙ্গে আসনের স্থানের সামঞ্জস্য রাখা প্রয়োজন।
অন্যথায়, বিমান ভ্রমণ দিন দিন আরও কঠিন হয়ে উঠবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান