মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী টেলিভিশন প্রোগ্রাম ‘সিক্সটি মিনিটস’-এর কার্যক্রম নিয়ে বিতর্ক চলছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা একটি বিশাল অঙ্কের মানহানি মামলার ছায়া পড়েছে এই অনুষ্ঠানে।
ট্রাম্পের অভিযোগ, অনুষ্ঠানটি তার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। এর মধ্যেই, সিবিএস কর্পোরেশন প্রধানরা মামলাটি মীমাংসা করার কথা ভাবছেন।
তবে, অনুষ্ঠানটির কর্মীরা তাদের কাজে অবিচল থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন সময় ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি এবং কার্যক্রম নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে।
ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে প্রতিটি পর্বে তার সরকারের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। সম্প্রতি, ইউক্রেন নীতি, শুল্ক, বিচার বিভাগ, এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করার মতো বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানটির একটি বিশেষ পর্বে, শ্বেতাঙ্গ নয় এমন, মধ্য ও উচ্চ বিদ্যালয়ের সঙ্গীতশিল্পীদের নিয়ে একটি পরিবেশনা প্রচার করা হয়।
এই শিল্পীরা একটি প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করে মার্কিন মেরিন কোরের ব্যান্ডের সাথে বাজানোর সুযোগ পেয়েছিল। তবে, ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশের কারণে মূল কনসার্টটি বাতিল করা হয়।
সেই প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠানটি সিবিএস নিউজ এর সহায়তায় একটি নতুন পরিবেশনার ব্যবস্থা করে। অনুষ্ঠানটির উপস্থাপক স্কট পেলির ভাষ্যে, “এই কনসার্টটি শোনানোর কথা ছিল না, কিন্তু এখন লক্ষ লক্ষ মানুষ এটি শুনবে।”
পেলির ধারাভাষ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের কার্যক্রমের সমালোচনা ছিল স্পষ্ট। এদিকে, ট্রাম্পের দায়ের করা মামলা এবং ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের (এফসিসি) তদন্তের কারণে ‘সিক্সটি মিনিটস’-এর ওপর চাপ বাড়ছে।
ট্রাম্পের অভিযোগ, অনুষ্ঠানটি তার নির্বাচনী প্রচারণায় হস্তক্ষেপ করেছে। যদিও সিবিএস জানিয়েছে, তারা তথ্য উপস্থাপনে কোনো ভুল করেনি।
মামলার নিষ্পত্তি নিয়ে সিবিএস-এর মধ্যে ভিন্ন মত রয়েছে। অনেকে মনে করেন, আপস করা উচিত, আবার কেউ কেউ মনে করেন, তাদের লড়াই চালিয়ে যাওয়া উচিত।
‘সিক্সটি মিনিটস’-এর নির্বাহী প্রযোজক বিল ওয়েন্স জানিয়েছেন, কোনো আপসের অংশ হিসেবে তিনি ক্ষমা চাইবেন না।
অনুষ্ঠানটির সাংবাদিক লেসলি স্টল বলেছেন, “আমার প্রিয় ‘সিক্সটি মিনিটস’ আমাদের অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা সঠিকের জন্য দাঁড়িয়েছি, এতে আমি গর্বিত।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ‘সিক্সটি মিনিটস’-এর কর্মীরা তাদের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়গুলো জনগণের সামনে তুলে ধরছেন।
তারা মনে করেন, এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সাংবাদিকদের সাহসী হওয়া উচিত। এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সরকারের জবাবদিহিতার বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে।
সাংবাদিকদের নিরপেক্ষভাবে তথ্য পরিবেশন করার গুরুত্ব অনেক। তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস