এলোন মাস্কের বিতর্ক এবং বাজারের তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে টেসলার শেয়ারের দামে বড় পতন।
বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে এক সময়ের প্রভাবশালী কোম্পানি টেসলার শেয়ারের দামে বড় ধরনের পতন দেখা যাচ্ছে। জানুয়ারী মাস থেকে এখন পর্যন্ত এই কোম্পানির শেয়ারের দাম ৪০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। শুধু তাই নয়, টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং মালিক, এলোন মাস্কের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণও গত তিন মাসে ১২১ বিলিয়ন ডলার কমেছে।
শেয়ারের এই দর পতনের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। টেসলার ব্যবসা বর্তমানে বেশ কঠিন সময় পার করছে।
গত বছর কোম্পানিটির বিশ্বব্যাপী বিক্রি কমে গিয়েছিল, যা তাদের জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। চলতি বছরেও পরিস্থিতি খুব একটা ভালো নয়। বাজার বিশ্লেষকরাও টেসলার বিক্রি পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছেন।
বিশেষ করে চীনের বাজারে টেসলার জন্য টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। গত মাসে দেশটিতে তাদের গাড়ির চালান (shipment) আগের বছরের তুলনায় ৪৯ শতাংশ কমেছে। ইউরোপেও তাদের বিক্রি কমছে, বিশেষ করে জার্মানিতে, যেখানে মাস্কের বিতর্কিত রাজনৈতিক মন্তব্য এবং ডানপন্থী একটি দলের প্রতি সমর্থনের কারণে ক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
গত মাসে জার্মানিতে টেসলার বিক্রি ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে।
অন্যদিকে, টেসলার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী চীনা কোম্পানি বিওয়াইডি (BYD) নতুন একটি চার্জিং প্রযুক্তি এনেছে, যা মাত্র পাঁচ মিনিটে গাড়িতে ২৫০ মাইল পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে।
যেখানে টেসলার চার্জিংয়ের গতি এর অর্ধেক। বাজারে টিকে থাকার জন্য টেসলা তাদের ‘ফুল সেলফ-ড্রাইভিং’ (পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ড্রাইভিং) সফটওয়্যার এক মাসের জন্য বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ চালু করেছে, যা তাদের বাজার ধরে রাখার একটি চেষ্টা।
তবে, শুধু ব্যবসার এই মন্দা-ই একমাত্র কারণ নয়। টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এলোন মাস্কের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডও এর জন্য দায়ী।
মাস্কের বিভিন্ন মন্তব্য এবং বিতর্কিত রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী এবং গ্রাহক তার ওপর আস্থা হারাচ্ছেন। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, আমেরিকার ৫৩ শতাংশ মানুষ মাস্ক সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেসলার শেয়ারের এই দরপতন এবং ব্যবসার অবনতির পেছনে মাস্কের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড একটি বড় ভূমিকা রাখছে। বাজারে অন্যান্য বৈদ্যুতিক গাড়ির (electric vehicle) সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ছে, যা টেসলার জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করছে।
এমন পরিস্থিতিতে, বিনিয়োগকারীরা এখন টেসলার ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান।
তথ্য সূত্র: সিএনএন