গ্রেফতার টাইম ম্যাগাজিনের প্রভাবশালী, ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিতে ফের বিতর্ক!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতির কড়াকড়ির মধ্যে মেক্সিকান বংশোদ্ভূত একজন নারীর আটকের ঘটনা নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। জ্যানেট ভিজগেরা নামের ৫৩ বছর বয়সী এই নারী, যিনি পেশায় একজন কর্মী এবং একইসাথে চার সন্তানের জননী, তাকে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) আটক করেছে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, তিনি অতীতে টাইম ম্যাগাজিনের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় স্থান পেয়েছিলেন।

জানা গেছে, জ্যানেট ভিজগেরা ১৯৯৭ সালে তার স্বামীর সঙ্গে মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। এরপর থেকে তিনি সেখানে অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন।

২০০৯ সালে জাল কাগজপত্র ব্যবহারের অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, যদিও পরে সেই মামলা খারিজ হয়ে যায়। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির কড়াকড়ির কারণে তিনি ২০১৭ সালে ডেনভারের একটি গির্জায় আশ্রয় নিয়েছিলেন, যা তিন বছর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল।

তখন তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।

সম্প্রতি, ডেনভার এলাকার একটি টার্গেট স্টোরে কাজ করার সময় ভিজগেরাকে আটক করা হয়। তার আইনজীবী জানিয়েছেন, বর্তমানে তিনি কলোরাডোর একটি ডিটেনশন সেন্টারে বন্দী আছেন।

আটকের পর তার পরিবারের সদস্যরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, এই আটকের ঘটনায় ভিন্নমতও রয়েছে। অভিবাসন নীতির কট্টর সমর্থকরা বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন। এমনকি প্রাক্তন এক ICE কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার আটকের খবরে আনন্দ প্রকাশ করেছেন।

ভিজগেরার আটকের ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন অভিবাসন ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এর আগে, একই ধরনের অভিযোগে আরও কয়েকজন প্রভাবশালী অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে।

আটক হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ব্রাউন ইউনিভার্সিটির একজন অধ্যাপক এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীও রয়েছেন।

জ্যানেট ভিজগেরা দীর্ঘদিন ধরে অভিবাসী অধিকারের পক্ষে সোচ্চার ছিলেন। তিনি সবসময় অভিবাসীদের অধিকারের কথা বলেছেন এবং তাদের প্রতি হওয়া অবিচার নিয়ে কথা বলেছেন।

তার এই আটকের ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কলোরাডোর গভর্নর এবং ডেনভারের মেয়র এই আটকের তীব্র নিন্দা করেছেন এবং বিষয়টিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

জ্যানেট ভিজগেরার পরিবার এবং সমর্থকেরা তার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছেন। তারা বলছেন, জ্যানেট একজন ভালো মা এবং সমাজের জন্য নিবেদিত একজন মানুষ।

তার এই অনুপস্থিতি পরিবার এবং সম্প্রদায়ের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *