শিশুদের টিকাকরণের বিষয়ে অভিভাবকদের দ্বিধা কাটাতে চিকিৎসকদের পরামর্শ
স্বাস্থ্যখাতে আধুনিকতার ছোঁয়ায় রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকাকরণের গুরুত্ব অপরিসীম।
রোগের প্রাদুর্ভাব কমাতে টিকার জুড়ি নেই। কিন্তু কিছু অভিভাবকের মধ্যে তাদের শিশুদের টিকা দেওয়া নিয়ে দ্বিধা দেখা যায়।
সম্প্রতি, টিকাকরণের প্রয়োজনীয়তা এবং এর সুফল নিয়ে অভিভাবকদের সচেতন করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
শিশুদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে অভিভাবকদের উদ্বেগের কারণগুলো বুঝতে হবে। অনেক অভিভাবক, বিশেষ করে সামাজিক মাধ্যম এবং বিভিন্ন গুজব থেকে পাওয়া তথ্যের কারণে, টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে চিন্তিত থাকেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, অভিভাবকদের উদ্বেগের কারণগুলো মনোযোগ সহকারে শুনে, তাদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করা উচিত। টিকা কিভাবে কাজ করে এবং এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে হবে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে, অভিভাবকদের মনে থাকা নির্দিষ্ট উদ্বেগের কারণগুলো চিহ্নিত করে, সেগুলোর উপযুক্ত সমাধান দেওয়া প্রয়োজন।
চিকিৎসকদের মতে, টিকা দেওয়ার আগে অভিভাবকদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা জরুরি। অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে, চিকিৎসকরা তাদের সন্তানের স্বাস্থ্য এবং মঙ্গলের জন্য কাজ করেন।
অভিভাবকদের উদ্বেগগুলিকে গুরুত্ব দিয়ে, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করতে হবে। অনেক সময়, অভিভাবকরা চিকিৎসকের উপর আস্থা রেখে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে রাজি হন।
টিকার গুরুত্ব বোঝাতে রোগের ভয়াবহতা তুলে ধরা প্রয়োজন। হাম একটি মারাত্মক রোগ।
হামের কারণে শিশুদের নিউমোনিয়া, মস্তিষ্কে প্রদাহ (এনসেফেলাইটিস) এবং এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই, টিকা শিশুদের জীবন রক্ষাকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি সমাজের বৃহত্তর সুরক্ষার জন্য টিকার গুরুত্ব অপরিসীম। যখন সমাজের বেশি সংখ্যক মানুষ টিকা গ্রহণ করে, তখন রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যা হার্ড ইমিউনিটি (herd immunity) নামে পরিচিত।
হার্ড ইমিউনিটির ফলে, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিরাও রোগের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভুল তথ্য ও গুজবের কারণে অনেক অভিভাবক টিকা দিতে দ্বিধা বোধ করেন। তাই, নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহ করা এবং কুসংস্কার দূর করা অত্যন্ত জরুরি।
অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে, টিকার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
তথ্যসূত্র: সিএনএন