মাহমুদ খলিল নামের একজন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা এবং গ্রিন কার্ড ধারক, তাকে আটকের ঘটনায় একটি নতুন মোড় এসেছে। সম্প্রতি, নিউইয়র্কের একজন ফেডারেল বিচারক এই মামলাটি লুইজিয়ানা থেকে নিউ জার্সিতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন।
মাহমুদ খলিলকে গত ৮ই মার্চ ফেডারেল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ নিউইয়র্ক থেকে আটক করে। এরপর তাকে নিউ জার্সিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বর্তমানে তিনি লুইজিয়ানায় আটক রয়েছেন।
আদালতের নথি অনুযায়ী, খলিল কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছিলেন এবং গত বছর ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসন তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করতে চেয়েছিল।
তবে আটকের দুই দিন পরেই নিউইয়র্কের ফেডারেল বিচারক জ্যাসি ফুরম্যান খলিলের মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে বিতাড়িত না করার নির্দেশ দেন। খলিলের আইনজীবীরা তার জামিনের আবেদন করেছেন, যাতে তিনি তার মার্কিন নাগরিক স্ত্রী, যিনি আগামী মাসে সন্তানের জন্ম দিতে যাচ্ছেন, তার সাথে মিলিত হতে পারেন।
বিচারক ফুরম্যান তার আদেশে উল্লেখ করেছেন যে, খলিলের আইনজীবীরা যখন পিটিশন জমা দেন, তখন তিনি নিউ জার্সিতে আটক ছিলেন। তাই নিউইয়র্কের আদালতের “অধিকাংশ, এমনকি সব দাবি” এর এখতিয়ার নেই।
নিউ জার্সিসংক্রান্ত আইনি বিষয় বিবেচনা করে আদালত এই মামলার শুনানির জন্য উপযুক্ত স্থান হিসেবে নিউ জার্সিকে নির্বাচন করেছেন। বিচারক আরও বলেছেন যে, ১০ই মার্চের আগের তার আদেশ বহাল থাকবে, যেখানে সরকার খলিলকে বিতাড়িত করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত নিউ জার্সির আদালত অন্য কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়।
মাহমুদ খলিলের আইনজীবীরা তার দ্রুত মুক্তির জন্য আবেদন করেছেন। তবে বুধবার সকাল পর্যন্ত বিচারক ফুরম্যান এই বিষয়ে কোনো রায় দেননি।
খলিলের বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ আনা হয়নি। তার আইনজীবীরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন তার রাজনৈতিক মতাদর্শ এবং কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিশোধ নিচ্ছে, যা সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
তারা যুক্তি দেখিয়েছেন যে, তার আটক তার বাকস্বাধীনতা এবং যথাযথ বিচার পাওয়ার অধিকার সহ সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে।
ট্রাম্প প্রশাসন অবশ্য অভিযোগ করেছে যে, খলিল হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের একটি বিরল ধারা ব্যবহার করে তাকে দেশ থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই ধারার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির উপস্থিতি “যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুতর, প্রতিকূল বৈদেশিক নীতিগত পরিণতি” ডেকে আনতে পারে মনে করলে, তাকে অপসারণ করা যায়।
আটকের পর মঙ্গলবার খলিল প্রথম একটি বিবৃতি দেন। সেই বিবৃতিতে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ডিটেনশন সেন্টারগুলোতে অভিবাসীদের প্রতি খারাপ আচরণের নিন্দা করেন এবং অভিযোগ করেন যে, তার রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে ট্রাম্প প্রশাসন তাকে টার্গেট করছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান