মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে বুধবার কিছুটা স্থিতিশীলতা দেখা গেছে, যেখানে বিনিয়োগকারীরা ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদের হার সংক্রান্ত ঘোষণার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। বাজারের এই অপেক্ষার কারণ হলো, ফেডারেল রিজার্ভের পক্ষ থেকে সুদের হার বিষয়ক সিদ্ধান্ত এবং সেই সাথে অর্থনীতির ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস কেমন হয়, সেদিকে সকলের দৃষ্টি রয়েছে।
সকাল বেলা শেয়ার বাজারের সূচকগুলোতে সামান্য ঊর্ধ্বগতি দেখা যায়। এস এন্ড পি ৫০০ সূচক ০.৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ডাউ জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ ২৩৭ পয়েন্ট বেড়ে ০.৬ শতাংশ বৃদ্ধি দেখায়। অন্যদিকে, নাসডাক কম্পোজিট সূচক ০.৯ শতাংশ বৃদ্ধি নিয়ে কারবার করছিল।
শেয়ার বাজারের এই স্থিতিশীলতা বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা অস্থিরতার পর এসেছে। মূলত, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন অর্থনৈতিক নীতিমালার কারণে বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন শিল্পকে ফিরিয়ে আনতে এবং সরকারি চাকরি হ্রাস করতে চেয়েছিলেন। তাঁর শুল্ক এবং অন্যান্য নীতিমালার ঘোষণার কারণে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন।
বর্তমানে, বাজারের সব দৃষ্টি এখন ফেডারেল রিজার্ভের দিকে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা সম্ভবত সুদের হারে কোনো পরিবর্তন আনবে না। বিশ্লেষকদের মতে, ফেডারেল রিজার্ভ কর্মকর্তাদের দেওয়া পূর্বাভাস বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, যেখানে সুদের হার, অর্থনীতি এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ে ধারণা দেওয়া হবে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ফেডারেল রিজার্ভ অন্তত দুই থেকে তিনবার সুদের হার কমাতে পারে।
বাজারের উল্লেখযোগ্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে এনভিডিয়া ১.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা তাদের শেয়ারের দর পতনের পরিমাণ কিছুটা কমিয়েছে। অন্যদিকে, টেসলার শেয়ারের দামও ২.৭ শতাংশ বেড়েছে। তবে খাদ্য প্রস্তুতকারক কোম্পানি জেনারেল মিলস-এর মুনাফা বাড়লেও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের শেয়ারের দর কমেছে ২.৩ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক বাজারে, জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক ০.২ শতাংশ কমেছে। জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার অপরিবর্তিত রাখায় এমনটা হয়েছে। এছাড়া, ফেব্রুয়ারী মাসে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ঘোষণা করেছে জাপান, যেখানে রপ্তানি ১১ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ইউরোপ ও এশিয়ার অন্যান্য বাজারে সূচক মিশ্র ছিল। বন্ড মার্কেটে, ১০-বছরের ট্রেজারি yield সামান্য কমে ৪.৩০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
এই মুহূর্তে, ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্ত এবং তাদের পূর্বাভাস বিশ্ব অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য, কারণ সুদের হার এবং অর্থনৈতিক নীতির পরিবর্তন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য, রেমিট্যান্স এবং উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস