মেক্সিকো সিটিতে ষাঁড়ের লড়াই বন্ধের পথে, পশুপ্রেমীদের জয়!

মেক্সিকো সিটি: ষাঁড়ের লড়াইয়ে অস্ত্র ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা, ঐতিহ্য বনাম পশু অধিকারের বিতর্ক

মেক্সিকো সিটিতে ষাঁড়ের লড়াইয়ের (bullfight) চিরাচরিত প্রথায় পরিবর্তন আসতে চলেছে। সম্প্রতি, মেক্সিকো সিটির স্থানীয় কংগ্রেসে একটি নতুন প্রস্তাবনা পাস হয়েছে, যেখানে ষাঁড়ের লড়াইয়ে ব্যবহৃত কিছু অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এই সিদ্ধান্তের ফলে ষাঁড়ের লড়াইয়ে পশু এবং মানুষ উভয়েরই আঘাতের সম্ভাবনা হ্রাস পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নতুন আইন অনুযায়ী, ষাঁড়ের লড়াইয়ে অংশগ্রহণকারীরা আর কোনো প্রকারের ছোরা বা তলোয়ার ব্যবহার করতে পারবেন না। এছাড়াও, ষাঁড়ের শিং ঢেকে দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হবে, যাতে লড়াইয়ের সময় মানুষের আহত হওয়ার ঝুঁকি কমে আসে।

মেক্সিকো সিটির মেয়র ক্লারা ব্রুগাদার নেতৃত্বাধীন মোরেনা পার্টির উত্থাপিত এই বিলটি ৬১টি ভোটের সমর্থনে পাস হয়, যেখানে বিপক্ষে ভোট পড়েছিল মাত্র একটি।

এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রাণী অধিকার আন্দোলনের কর্মীরা আনন্দিত হলেও, ষাঁড়ের লড়াইয়ের সমর্থকরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

বিল পাসের সময় কংগ্রেস ভবনের বাইরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এদের মধ্যে কেউ কেউ ব্যারিয়ার ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন, আবার অনেকে ষাঁড়ের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য প্ল্যাকার্ড বহন করেন।

এই আইনের মূল উদ্দেশ্য হলো ষাঁড়ের লড়াইকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ না করে, এটিকে আরও মানবিক করে তোলা।

বিলের প্রস্তাবক ভিক্টর হুগো রোমো দে ভিভার জানান, “আমরা ষাঁড়ের লড়াইকে বিলুপ্ত করতে চাই না, বরং এর একটি বিবর্তন ঘটাতে চাই।

মেয়র ক্লারা ব্রুগাদা এই বিল পাস হওয়ার পর এক বিবৃতিতে জানান, মেক্সিকো সিটিকে “একটি শহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে, যা পশু অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে এবং তাদের ওপর কোনো প্রকার অত্যাচার বা সহিংসতা সহ্য করবে না।”

নতুন এই আইন কার্যকর হতে ২১০ দিন সময় লাগবে। এই সময়ের মধ্যে সরকার ষাঁড়ের লড়াইয়ের নিয়মকানুন বিষয়ক নতুন বিধিমালা তৈরি করবে।

উল্লেখ্য, মেক্সিকো সিটিতে বিশ্বের বৃহত্তম ষাঁড়ের লড়াইয়ের স্থান রয়েছে, যা স্পেনের থেকেও বড়।

ষোড়শ শতকে স্প্যানিশদের হাত ধরে মেক্সিকোতে এই খেলার প্রচলন শুরু হয়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ল্যাটিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশ ষাঁড়ের লড়াই নিষিদ্ধ করেছে।

গত বছর, কলম্বিয়া ২০২৭ সাল নাগাদ এই ঐতিহ্যবাহী খেলাটি সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *