ইন্দোনেশিয়ার বিতর্কিত সামরিক আইন: জনগণের মাঝে চরম উদ্বেগ!

ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্টে সম্প্রতি বিতর্কিত একটি আইন পাস হয়েছে, যা দেশটির সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের বেসামরিক পদে আরও বেশি সুযোগ করে দেবে। বৃহস্পতিবার এই আইনটি অনুমোদিত হওয়ার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হচ্ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এর ফলে দেশটির গণতন্ত্র সামরিক শাসনের পুরোনো ‘নতুন অর্ডারের’ দিকে ফিরে যেতে পারে।

আইনটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আপত্তি জানিয়েছেন দেশটির নাগরিক সমাজ এবং বিভিন্ন অধিকার সংগঠনগুলো। তাদের মতে, এই আইনের মাধ্যমে সামরিক কর্মকর্তাদের বেসামরিক প্রশাসনে ক্ষমতা বিস্তারের সুযোগ তৈরি হবে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের সম্ভাবনা বাড়াবে। বিশেষ করে, সাবেক স্বৈরশাসক সুহার্তোর শাসনামলে সামরিক বাহিনীর যে ব্যাপক প্রভাব ছিল, সেই ধরনের পরিস্থিতি আবার ফিরে আসতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

পার্লামেন্টের স্পিকার পুয়ান মহারানির নেতৃত্বে ভোটাভুটির মাধ্যমে আইনটি পাস হয়। তিনি জানান, এই আইনটি গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। তবে সমালোচকরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই প্রাবো Subianto সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা বেসামরিক খাতে প্রসারিত করার চেষ্টা করছেন। সুহার্তোর শাসনামলে তিনি বিশেষ বাহিনীর কমান্ডার ছিলেন।

আইনটির প্রতিবাদে এরই মধ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও গণতন্ত্রকামী দলগুলো রাজধানী জাকার্তার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে বিক্ষোভ করার ঘোষণা দিয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সামরিক কর্মকর্তাদের বেসামরিক পদ থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন।

সরকার অবশ্য বলছে, বেসামরিক পদে যোগ দিতে হলে সামরিক কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে অবসর নিতে হবে। এছাড়া, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি বিভাগে সামরিক কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হবে। সরকারি মালিকানাধীন কোনো কোম্পানিতেও তারা যোগ দিতে পারবে না।

সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা বিস্তারের কারণ হিসেবে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শাফরি শামসুদ্দিন যুক্তি দিয়ে বলেছেন, “ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং সামরিক প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে সামরিক বাহিনীকে প্রচলিত ও অপ্রচলিত উভয় ধরনের সংঘাত মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে।”

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *