ইরানে ৮৮০ দিনের বেশি সময় ধরে কারাবন্দী থাকা ফরাসি নাগরিক অলিভার গ্রঁদোকে অবশেষে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক বিবৃতিতে এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
তবে, ঠিক কী কারণে তাঁর মুক্তি মিলেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। মুক্তির এই ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটল, যখন ফ্রান্স ইরানের সঙ্গে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইরানের প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনেইয়ের কাছে চিঠি লিখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। ধারণা করা হচ্ছে, পরমাণু আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের প্রতি ইরানের সমর্থন নিয়েও তেহরানের উপর চাপ সৃষ্টি করছে যুক্তরাষ্ট্র।
ফরাসি মন্ত্রী জ্যাঁ-নোয়েল বারো একটি ছবিতে গ্রঁদোর মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ছবিতে দেখা যায়, তিনি একটি ব্যক্তিগত বিমানে হাসিমুখে বসে আছেন।
বারো তাঁর বক্তব্যে বলেন, এখনো যারা ইরানে বন্দী রয়েছেন, সেই সিসিল কোহলার এবং জ্যাক পারিসকে মুক্ত করার জন্য ফ্রান্স সরকার অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
২০২২ সালের অক্টোবরে ইরানের শিরাজ শহরে গ্রঁদোরকে আটক করা হয়। মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর দেশজুড়ে চলা বিক্ষোভের মধ্যে তাঁর গ্রেফতার হয়।
মাহসা আমিনিকে হিজাব পরার নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে আটক করা হয়েছিল এবং পুলিশি হেফাজতে তাঁর মৃত্যু হয়। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা পরে জানায়, মাহসার মৃত্যুর জন্য ইরান দায়ী।
গ্রঁদোরকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত করে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। যদিও গ্রঁদোর, তাঁর পরিবার এবং ফরাসি সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তাঁকে তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। এই কারাগারে সাধারণত বিদেশি নাগরিক, দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে এমন ব্যক্তি এবং রাজনৈতিক বন্দীদের রাখা হয়।
পশ্চিমী দেশগুলোর সঙ্গে দর কষাকষির ক্ষেত্রে ইরান প্রায়ই এদের ব্যবহার করে থাকে।
মুক্তির পর গ্রঁদোরকে নিয়ে আসা হয় ফ্রান্সে। বিমানবন্দরে তাঁর পরিবারের সঙ্গে মিলিত হওয়ার একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে।
সেই সময় তাঁর পরনে ছিল ব্রিটনি স্পিয়ার্সের ছবিযুক্ত একটি টি-শার্ট। ফরাসি সম্প্রচারমাধ্যম টিএফ১ সেই ফুটেজ প্রচার করে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান