মার্কিন মুলুক ছাড়ছেন তারকারা! ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন আতঙ্ক?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্ভাব্য দ্বিতীয় মেয়াদের জল্পনার মধ্যে হলিউডের বেশ কয়েকজন তারকা দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই খবরটি এখন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে বেশ আলোচিত হচ্ছে।

জানা গেছে, সেলিব্রেটিরা যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, স্পেন এবং মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছেন বা সেখানে যাওয়ার কথা ভাবছেন। তাদের এই সিদ্ধান্তের পেছনে মূল কারণগুলো হলো রাজনৈতিক অস্থিরতা, সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষা এবং বিভিন্ন নীতিমালার পরিবর্তন নিয়ে উদ্বেগ।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, অভিনেত্রী কোর্টনি লাভ যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন। জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপিকা এলিজ ডি জেনার্স এবং তার স্ত্রী পোর্শিয়া ডি রসি এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছেন এবং তাদের যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সম্পত্তিও বিক্রি করে দিয়েছেন।

অভিনেতা রায়ান গসলিং, অভিনেত্রী ইভা মেন্ডেজ এবং তাদের দুই সন্তান গত গ্রীষ্মে লন্ডনে চলে যান। অভিনেত্রী আমেরিকা ফেরেরাও সেখানে স্কুল খুঁজছেন, যা তার সম্ভাব্য স্থানান্তরের ইঙ্গিত দেয়।

এছাড়াও, অভিনেত্রী রুজি ও’ডনেল তার সন্তানকে নিয়ে আয়ারল্যান্ডে চলে গেছেন এবং সেখানকার নাগরিকত্ব নিতে আগ্রহী। তিনি তার সন্তানের অধিকার রক্ষার কথা উল্লেখ করেছেন।

যদিও অভিনেত্রী ইভা লঙ্গোরিয়া বর্তমানে স্পেন ও মেক্সিকোতে বসবাস করছেন, তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই তারকাদের দেশত্যাগের সিদ্ধান্তের পেছনে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির প্রতি অসন্তোষ একটি বড় কারণ। বিশেষ করে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংখ্যালঘুদের অধিকার খর্ব হওয়ার আশঙ্কা তাদের মধ্যে কাজ করছে।

তাদের মতে, এই সেলিব্রেটিদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন, ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হলে সংখ্যালঘুদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠবে।

এছাড়াও, শুধু তারকারাই নন, সাধারণ আমেরিকানদের মধ্যেও অনেকে যুক্তরাজ্যে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করছেন। পরিসংখ্যান বলছে, ব্রিটিশ নাগরিকত্বের জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা ৪০ শতাংশ বেড়েছে।

তবে, এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে সমাজের উচ্চবিত্তদের সুযোগ বেশি থাকে, যা সাধারণ মানুষের জন্য সবসময় সহজ নয়।

সব মিলিয়ে, হলিউডের এই তারকাদের দেশত্যাগের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তাদের এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির প্রতি অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ, তেমনি এটি বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো আরও একবার সামনে নিয়ে এসেছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *