ফ্লোরিডার এক ব্যক্তিকে ১৯৮৩ সালে এক শিশু ও তার ঠাকুরমাকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে, এডওয়ার্ড জেমস নামের ৬৩ বছর বয়সী এই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার প্রস্তুতি চলছে।
আগামীকালের মধ্যে, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায়, স্টার্কের বাইরের একটি কারাগারে তাকে প্রাণঘাতী ইনজেকশন দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস ফেব্রুয়ারিতে তার মৃত্যুদণ্ডের পরোয়ানা স্বাক্ষর করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৩ সালের ১৯শে সেপ্টেম্বর, টনি নিউনার নামে আট বছর বয়সী এক শিশু এবং তার ঠাকুরমা বেটি ডিককে হত্যা করার অভিযোগে জেমসকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। জেমস ঘটনার রাতে অতিরিক্ত মদ্যপান এবং মাদক সেবন করেছিলেন।
তিনি ক্যাসেলবেরির ডিকের বাড়িতে একটি কক্ষে ভাড়া থাকতেন, যেখানে টনি নিউনার এবং আরও তিনজন শিশু ছিল। ঘটনার দিন রাতে জেমস প্রায় ২৪ ক্যান বিয়ার পান করেন এবং কিছু জিন ও এলএসডি সেবন করেন।
পরে তিনি ডিকের ঘরে ফিরে যান। আদালতের নথি অনুযায়ী, জেমস মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
এরপর তিনি ডিকের শরীরে ২১ বার ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন এবং তার গহনা ও গাড়ি চুরি করেন। জেমস দোষ স্বীকার করার পরও জুরি বোর্ডের ১১-১ ভোটে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
জেমস এর আইনজীবী রাজ্য এবং ফেডারেল আদালতে বেশ কয়েকবার আপিল করেছিলেন, কিন্তু তার সব আবেদন খারিজ হয়ে যায়। জেমসের আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছিলেন যে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ও অ্যালকোহল সেবন, একাধিকবার মাথায় আঘাত এবং ২০২৩ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তার মানসিক অবস্থার অবনতি হয়েছে।
ফলে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক শাস্তি। তবে আদালত নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছিল যে “জেমসের জ্ঞানীয় সমস্যাগুলি তাকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রক্ষা করবে না”।
আদালত আরও জানায়, কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তার মস্তিষ্কে অক্সিজেনের অভাব হয়েছিল, যা নতুন প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা করার মতো নয়। আদালত আরও জানায়, নতুন প্রমাণ হলেও “আসামি প্রমাণ করতে পারেনি যে এই ধরনের প্রমাণ নতুন করে শুনানির মাধ্যমে তার শাস্তিকে কমিয়ে দিত”।
ফ্লোরিডার মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতি সম্পর্কে জানা যায়, এখানে প্রাণঘাতী ইনজেকশনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এই ইনজেকশনে তিনটি ওষুধ ব্যবহার করা হয়: একটি অবশকারী, একটি পক্ষাঘাত সৃষ্টিকারী এবং অপরটি হৃদযন্ত্র বন্ধ করার ওষুধ।
এই বছরের শুরুতে, জেমস ফোর্ড নামে আরও একজনকে ১৯৯৭ সালে শার্লট কাউন্টিতে এক দম্পতিকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, যে ঘটনার একমাত্র সাক্ষী ছিল তাদের শিশুকন্যা। গভর্নর ডিস্যান্টিস ২০০০ সালে ফ্লোরিডা কিসের এক নারীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত মাইকেল তানজির মৃত্যুদণ্ডের পরোয়ানাও স্বাক্ষর করেছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান