পেনসিলভেনিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুদীক্ষা কোনানকীর মৃত্যুর প্রমাণ চেয়েছেন তাঁর শোকাহত বাবা-মা। ডমিনিকান রিপাবলিকের কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা তাঁদের মেয়ের মৃত্যুর আইনি স্বীকৃতি চেয়েছেন, যেখানে সুদীক্ষার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। এই ঘটনা শোকের সঙ্গে আইনি জটিলতাকেও সামনে নিয়ে এসেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, সুদীক্ষা সম্ভবত পানিতে ডুবে মারা গেছেন, তবে এখনো পর্যন্ত কোনো অপকর্মের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সুদীক্ষার বাবা-মা, সুব্বারায়েদু কোনানকী এবং শ্রীদেবী কোনানকী, একটি চিঠিতে এই বিষয়টি উল্লেখ করেছেন এবং পুলিশের কাছে তাঁদের মেয়ের মৃত্যুর আইনি ঘোষণার জন্য অনুরোধ করেছেন।
পরিবারটি জানিয়েছে, তাঁরা ডমিনিকান প্রজাতন্ত্রের আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা পূরণ করতে প্রস্তুত। তাঁদের মতে, এই প্রক্রিয়া শুরু হলে তাঁরা শোকের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবেন এবং সুদীক্ষার অনুপস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়গুলো সমাধান করতে পারবেন।
ভার্জিনিয়ার লাউডাউন কাউন্টি শেরিফের অফিস জানিয়েছে, তারা সুদীক্ষার শোকাহত বাবা-মায়ের এই ইচ্ছাকে সমর্থন করে এবং ডমিনিকান কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে শেরিফের মুখপাত্র টমাস জুলিয়া এক ইমেইল বার্তায় জানিয়েছেন, ডমিনিকান প্রজাতন্ত্রের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
ডমিনিকান প্রজাতন্ত্রের আইনজীবী জুলিও কুরি জানান, সাধারণত কোনো ব্যক্তির মৃতদেহ বা অপরাধের প্রমাণ না পাওয়া গেলে সেখানে কাউকে মৃত ঘোষণা করা হয় না। এক্ষেত্রে, কর্তৃপক্ষের কাছে তেমন কোনো প্রমাণ নেই। মৃতদেহ ছাড়া মৃত্যুর ঘোষণা দেশটির কংগ্রেস বা প্রেসিডেন্টের বিশেষ আইনের মাধ্যমে হতে পারে। এই প্রক্রিয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানিয়েছে, বিদেশে কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর প্রমাণ হিসেবে তারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া মূল মৃত্যু সনদ গ্রহণ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের আইন অনুযায়ী, নিখোঁজ ব্যক্তির মৃত্যুর ঘোষণার কিছু বিশেষ পরিস্থিতি রয়েছে। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক নাওমি কহন জানিয়েছেন, কোনো ব্যক্তি যদি সাত বছর ধরে নিখোঁজ থাকেন, তাহলে তাকে মৃত ঘোষণা করা যেতে পারে। এছাড়াও, যদি এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয় যেখানে ব্যক্তির জীবন সংকটাপন্ন ছিল, তাহলে সাত বছর অপেক্ষা করার প্রয়োজন নাও হতে পারে।
লাউডাউন কাউন্টি শেরিফের অফিস শোকাহত পরিবারটিকে আইনি সহায়তা প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবারটি সম্ভবত এই কারণে সুদীক্ষার মৃত্যুর ঘোষণা চাইছে, যাতে তারা শোক কাটিয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও, এই ঘোষণার মাধ্যমে সুদীক্ষার উইল ও অন্যান্য বিষয়গুলো পরিচালনা করা সহজ হবে। উদাহরণস্বরূপ, তাঁর নামে থাকা কোনো কলেজ ফান্ড বা বীমার অর্থ পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, মৃত্যুর সনদ না পাওয়া পর্যন্ত এই বিষয়গুলো অচল থাকে।
যদি পরিবার কোনো ধরনের মামলা করতে চায়, তাহলে মৃত্যুর ঘোষণা সেই মামলার ধরন এবং ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই ঘটনা ২০০৫ সালে আরুবা দ্বীপে নাটালি হলোওয়ের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেয়। নাটালীর বাবা তাঁর মেয়ের মৃত্যুর ঘোষণার জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন