বিদেশ বিভুঁইয়ে একা জীবন: সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল?

প্রবাসে একা জীবন: একাকীত্ব আর দ্বিধার গল্প

নতুন একটি দেশে ভালো জীবন গড়ার স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি জমানো মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। উন্নত জীবনযাত্রা, প্রকৃতির সান্নিধ্য অথবা কর্মজীবনের সুযোগ—এমন নানা কারণের টানে মানুষ ঘর ছাড়ে।

তবে সবকিছু ছেড়ে অচেনা পরিবেশে নতুন করে সবকিছু শুরু করাটা সব সময় সহজ হয় না। বিশেষ করে যখন একাকীত্বের অনুভূতি গ্রাস করে, তখন ভালো থাকার সেই স্বপ্নগুলো ফিকে হয়ে আসে।

৩৪ বছর বয়সী এক নারীর গল্প এটি, যিনি উন্নত জীবনের আশায় একা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। প্রকৃতির কাছাকাছি থাকা, শান্ত ও সুস্থ জীবন কাটানোর আকাঙ্ক্ষা ছিল তাঁর।

কিন্তু সেখানে গিয়ে বন্ধু তৈরি করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। এর আগে তিনি একবার বিদেশে ছিলেন, সেই সময়টা ছিল তাঁর জীবনের অন্যতম আনন্দের সময়।

কিন্তু এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। একা থাকা, দূর থেকে অফিসের কাজ করা—এসবের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। পরিবার, বন্ধু এবং সঙ্গীকে খুব মনে পড়ে, যদিও তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত কথা হয় এবং দেখা করার জন্য মাঝে মাঝে দেশে যাওয়া-আসা করেন।

আমাদের সমাজে পরিবার ও বন্ধুত্বের সম্পর্কগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই, নতুন পরিবেশে একাকীত্ব বোধ করাটা স্বাভাবিক।

পরিচিত জগৎ থেকে দূরে, আপনজনদের অভাব বোধ করা—এগুলো মানুষকে হতাশ করে তোলে। নতুন করে সবকিছু শুরু করতে সময় লাগে, এটা সত্যি।

কিন্তু সেই সময়টুকু কাটানো অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।

এই পরিস্থিতিতে, একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ হলো—নিজের অনুভূতির প্রতি মনোযোগ দেওয়া। এই পরিবর্তনের ফলে আপনি কি খুশি?

যদি উত্তর না হয়, তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। জীবনকে নতুন দিকে মোড় দেওয়া বা পুরনো অবস্থানে ফিরে আসা— দুটোই সম্ভব।

অনেক মানুষ বিদেশে যাওয়ার পর তাঁদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন। এটিকে ব্যর্থতা হিসেবে দেখার কোনো কারণ নেই।

বরং, এটি আত্ম-উপলব্ধির একটি সুযোগ।

বিদেশে যাওয়ার পেছনে যদি থাকে নতুন কিছু অভিজ্ঞতা অর্জনের বাসনা, তাহলে নিজের ভেতরের শক্তিকে চিনে নেওয়ারও সুযোগ রয়েছে। যদি মনে হয়, এই জীবন আপনার জন্য নয়, তবে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার সাহস রাখাটাও জরুরি।

এতে আত্ম-নির্ভরশীলতা বাড়ে।

প্রবাস জীবনের ভালো-মন্দ দুটো দিকই আছে। নতুন জায়গায় নিজেকে মানিয়ে নেওয়া সহজ নাও হতে পারে।

তাই, এই ধরনের পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। প্রয়োজনে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *