চাকরি হারানোর উদ্বেগে? বেকার ভাতার আবেদনে সামান্য বৃদ্ধি!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান বিষয়ক এক নতুন চিত্র উঠে এসেছে, যেখানে বেকারত্বের সুবিধা চেয়ে করা আবেদনের সংখ্যা সামান্য বাড়লেও, কর্মী ছাঁটাইয়ের হার এখনো বেশ কম। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ই মার্চ শেষ হওয়া সপ্তাহে, নতুন করে ২ লাখ ২৩ হাজার মানুষ বেকারত্বের সুবিধার জন্য আবেদন করেছেন।

যদিও বিশ্লেষকদের ধারণা ছিল এই সংখ্যা ২ লাখ ২৪ হাজারের কাছাকাছি থাকবে। সাধারণত, প্রতি সপ্তাহে বেকারত্বের সুবিধার জন্য আসা আবেদনগুলো কর্মী ছাঁটাইয়ের একটি ধারণা দেয়।

গত কয়েক বছর ধরে এই সংখ্যা ২ লাখ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজারের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। এই হিসাবের গড় করলে, যা গত চার সপ্তাহের প্রবণতা তুলে ধরে, সেই সংখ্যা সামান্য বেড়ে ২ লাখ ২৭ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের ‘ডোগ’ (DOGE) প্রকল্পের আওতায় সরকারি কর্মীদের চাকরি ছাড়ার বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়। ‘ডোগ’ আসলে সরকারি অফিসের কার্যকারিতা বাড়ানোর একটি উদ্যোগ, যার নেতৃত্বে রয়েছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক।

ফেব্রুয়ারী মাসের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ফেডারেল সরকার ১০ হাজার কর্মী কমিয়েছে, যা ২০২২ সালের জুন মাসের পর সর্বোচ্চ। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, মার্চ মাসের হিসাবের আগে এই ছাঁটাইয়ের তেমন প্রভাব দেখা যাবে না।

জানা গেছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে সরকারি কর্মীর সংখ্যা কমানোর যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, তারই অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত মাসে, সরকারি কর্মকর্তাদের একটি স্মারকের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া আরও জোরদার করা হয়।

এর ফলে, এরই মধ্যে হাজার হাজার অস্থায়ী কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। যদিও, আদালতের নির্দেশে তাদের মধ্যে কয়েক হাজার কর্মীকে পুনরায় নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বিগত এক বছরে বাজারের কিছু দুর্বলতা দেখা গেলেও, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বাজার বেশ স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে কাজের সুযোগও অনেক বেশি, এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম।

শ্রম বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে মার্কিন নিয়োগকর্তারা প্রায় ১ লাখ ৫১ হাজার নতুন কর্মী নিয়োগ করেছেন। যদিও বেকারত্বের হার সামান্য বেড়ে ৪.১ শতাংশ হয়েছে, তবে এটিকে এখনো স্বাভাবিক হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে, বেশ কিছু বড় কোম্পানি চলতি বছরে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে ওয়ার্কডে, ডাও, সিএনএন, স্টারবাকস, সাউথওয়েস্ট এয়ারলাইন্স এবং ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা।

গত ৮ই মার্চ পর্যন্ত, বেকারত্বের সুবিধা গ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ লাখ ৯০ হাজারে, যা আগের সপ্তাহের চেয়ে প্রায় ৩৩ হাজার বেশি।

মোটকথা, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে এখনো পর্যন্ত স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে, যদিও কর্মী ছাঁটাই এবং বেকারত্বের সুবিধা চেয়ে করা আবেদনের সংখ্যা সামান্য বৃদ্ধি একটি উদ্বেগের বিষয়।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *