শুক্র ও পৃথিবীর মধ্যে বিরল সংযোগ, তবে খালি চোখে দেখা কঠিন। এই সপ্তাহান্তে শুক্র গ্রহটি পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝে অবস্থান করবে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় এই ঘটনাকে বলা হয় ‘ইনফিরিয়র কনজাঙ্কশন’ বা নিম্ন সংযোগ। তবে সাধারণ মানুষের পক্ষে এই মহাজাগতিক দৃশ্য খালি চোখে দেখা প্রায় অসম্ভব।
বিশেষ সরঞ্জাম এবং প্রশিক্ষিত চোখ ছাড়া এটি চিহ্নিত করা কঠিন। এই বিরল ঘটনা আসলে কী? যখন দুটি জ্যোতিষ্ক – যেমন দুটি গ্রহ অথবা একটি গ্রহ ও সূর্য – আকাশের একই স্থানে আসে, তখন তাকে সংযোগ বা কনজাঙ্কশন বলে।
শুক্র গ্রহের এই নিম্ন সংযোগের সময় গ্রহটি পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চলে আসে। এটি একটি বিশেষ ঘটনা, যা প্রায় ১৯ মাস পর পর ঘটে থাকে।
এই সময়টাকে “শুক্রের চুম্বন” বলেও অনেকে অভিহিত করেন, কারণ পৃথিবী ও শুক্র কাছাকাছি আসে। যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী, এই সংযোগটি ঘটবে সম্ভবত রাত ৯টার দিকে।
যা বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী, সকাল ৭টা। তবে সূর্যের তীব্র আলোর কারণে দিনের বেলায় একে দেখা সম্ভব নয়। তবে, এই ঘটনার আগে ও পরে শুক্র গ্রহকে আকাশে দেখা যেতে পারে।
সংযোগের আগে, সন্ধ্যার আকাশে দিগন্তের কাছে শুক্রকে দেখা যেতে পারে, যা একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো দেখায়। খালি চোখে হয়তো একে ভালোভাবে দেখা যাবে না।
এই সময়টাতে শুক্রকে সন্ধ্যার আকাশে পশ্চিম দিকে অস্ত যেতে দেখা যাবে। সংযোগের পর, এটি ভোরবেলায় পূর্ব আকাশে সূর্যোদয়ের আগে দৃশ্যমান হবে।
তবে এক্ষেত্রে সূর্যের দিকে সরাসরি তাকালে চোখের ক্ষতি হতে পারে। এই ধরনের মহাজাগতিক ঘটনাগুলি বিজ্ঞানীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এর মাধ্যমে গ্রহগুলির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা যায়, যা মহাকাশ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানকে আরও বৃদ্ধি করে। বর্তমানে নাসা (NASA) শুক্র গ্রহ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানার জন্য দুটি মিশন পরিচালনা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই মিশনগুলির মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা শুক্র গ্রহের গঠন এবং পৃথিবীর থেকে এর ভিন্নতা সম্পর্কে নতুন তথ্য জানতে পারবেন। শুধু বিজ্ঞান নয়, সাহিত্য ও সঙ্গীতের জগতেও এই ঘটনার প্রভাব রয়েছে।
পল ম্যককার্টনির বিখ্যাত গান “দ্য কিস অফ ভেনাস” (The Kiss of Venus) তৈরি হয়েছিল এই ঘটনার উপর ভিত্তি করে লেখা একটি বইয়ের একটি অধ্যায় থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। মোটকথা, এই সপ্তাহান্তে শুক্র ও পৃথিবীর মধ্যেকার এই বিরল সংযোগ খালি চোখে দেখা কঠিন হলেও, এর বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব অনেক।
এটি মহাকাশ বিজ্ঞানীদের জন্য একটি মূল্যবান সুযোগ, যা আমাদের সৌরজগত এবং মহাবিশ্ব সম্পর্কে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)