মেটা’র নিষেধাজ্ঞার পরেও সাবেক কর্মীর বই: বাজিমাত!

মেটা’র (সাবেক ফেসবুক) এক প্রাক্তন কর্মীর লেখা বিস্ফোরক এক বই, যা বর্তমানে বেস্ট সেলারের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে। সারা উইন-উইলিয়ামস নামক ওই নারীর লেখা ‘কেয়ারলেস পিপল’ নামের বইটি প্রকাশের শুরু থেকেই আলোচনায়।

মেটা কর্তৃপক্ষ বইটির প্রচার বন্ধ করার জন্য আইনি পদক্ষেপ নিলেও, তাতে খুব একটা সুবিধা হয়নি। বইটির বিক্রি রীতিমতো রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

জানা গেছে, উইন-উইলিয়ামস এক সময় মেটা’র গ্লোবাল পাবলিক পলিসি বিভাগের পরিচালক ছিলেন। তার লেখা এই বইটিতে মেটা’র ভেতরের নানা গোপন কথা এবং কর্মপরিবেশের কিছু দিক উন্মোচন করা হয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের বেস্ট সেলারের তালিকায় সবার উপরে রয়েছে বইটি। এছাড়া, সানডে টাইমস ননফিকশন হার্ডব্যাক চার্টেও চতুর্থ স্থানে জায়গা করে নিয়েছে এটি।

প্রকাশনা সংস্থা প্যান ম্যাকমিলান-এর প্রধান নির্বাহী জোয়ানা প্রায়র জানিয়েছেন, “মেটা কর্তৃপক্ষের নানা চেষ্টা সত্ত্বেও, প্রথম তিন দিনেই যুক্তরাজ্যে প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। এই সাফল্য মেটা’র বিরুদ্ধে এক প্রকার বিজয়।”

বইটি শুধু যুক্তরাজ্যেই নয়, অ্যামাজন ইউএস চার্টেও চতুর্থ এবং ইউকে চার্টে ১৩তম স্থান দখল করেছে। গত বুধবার, মেটা জরুরি ভিত্তিতে একটি সালিশি রায় (আর্বিট্রেশন) আদায় করে, যার মাধ্যমে উইন-উইলিয়ামসকে বইটির প্রচার বন্ধ করতে বলা হয়েছে।

আমেরিকান আর্বিট্রেশন অ্যাসোসিয়েশনের জরুরি সালিশকারী নিকোলাস গোয়েন বলেছেন, এই পদক্ষেপ না নিলে মেটা’র “অবিলম্বে অপূরণীয় ক্ষতি” হবে। মেটার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, উইন-উইলিয়ামসের সঙ্গে তাদের করা একটি ‘নন-ডিসপ্যারেজমেন্ট এগ্রিমেন্ট’-এর (মানহানি নয় এমন চুক্তি) শর্ত ভেঙেছেন লেখক।

বইটি প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহ আগে ঘোষণা করা হয়েছিল, যেখানে প্রি-অর্ডার করার সুযোগ ছিল খুবই কম। সাধারণত, বইয়ের বিক্রি বাড়াতে মাসের পর মাস ধরে প্রি-অর্ডার নেওয়া হয়।

উইন-উইলিয়ামসের এই আত্মজীবনী, মেটা’র সঙ্গে কাটানো সাত বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা। বইটিতে তিনি লিখেছেন, কিভাবে তিনি “কিছু আবেগগতভাবে দুর্বল পুরুষের তৈরি করা এক নিষ্ঠুর সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছিলেন, যেখানে যৌন হয়রানির মতো ঘটনাগুলো নিয়মিত ঘটত।”

নিউইয়র্ক টাইমসে জেনিফার সজাই লিখেছেন, এই বইটি বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী একটি কোম্পানির একটি “কুৎসিত, বিস্তারিত চিত্র” তুলে ধরেছে। মেটা অবশ্য বইটির বিষয়বস্তুকে ভিত্তিহীন এবং তাদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

সালিশি রায়ে উইন-উইলিয়ামসকে বইটির প্রচার বন্ধ করতে, সমালোচনামূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে এবং আগের করা কিছু আপত্তিকর মন্তব্য প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। তবে প্রকাশনা সংস্থার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে বলা হয়নি।

প্যান ম্যাকমিলান-এর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “প্রকাশক হিসেবে আমরা বাকস্বাধীনতা এবং লেখকের গল্প বলার অধিকারে বিশ্বাস করি।”

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *