টাকা বাঁচিয়ে বেশি ফল ও সবজি খান! স্বাস্থ্যকর উপায়!

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য ফল ও সবজির গুরুত্ব অপরিসীম। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সামগ্রিক সুস্থতার জন্য খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ধরনের ফল ও সবজি যোগ করা প্রয়োজন।

কিন্তু বাজারে সবজির দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় অনেকের পক্ষেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল ও সবজি খাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তবে, কিছু কৌশল অবলম্বন করে সাশ্রয়ী মূল্যে এই চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।

আমাদের দেশের বাজারগুলোতে, বিশেষ করে কাঁচা বাজারে, অনেক সময় তুলনামূলকভাবে কম দামে ভালো সবজি পাওয়া যায়। সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কেনার ফলে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য এড়ানো যায়, ফলে দামও থাকে হাতের নাগালে।

এছাড়াও, স্থানীয় বাজারে মৌসুমি ফল ও সবজি পাওয়া যায়, যা একদিকে যেমন সস্তা, তেমনি স্বাদেও অতুলনীয়। উদাহরণস্বরূপ, গ্রীষ্মকালে আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু ইত্যাদি ফল পাওয়া যায়, যা দামে সস্তা এবং শরীরের জন্য খুবই উপকারী।

শীতকালে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, যেমন – পালং শাক, মুলা শাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি ইত্যাদি পাওয়া যায় যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ সরবরাহ করে।

সবজির দাম বেশি হলে, আপনি কিছুদিনের জন্য ফ্রিজে রাখা সবজি ব্যবহার করতে পারেন। বর্তমানে, বাজারে বিভিন্ন ধরনের ফ্রোজেন সবজি পাওয়া যায়, যা স্বাস্থ্যকর এবং সাশ্রয়ী।

এইসব সবজি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় এবং রান্নার সময়ও অনেক সুবিধা হয়। কেনার সময় অবশ্যই লেবেল দেখে নিন, যাতে অতিরিক্ত লবণ, চিনি বা অন্য কোনো উপাদান মেশানো না থাকে।

ফ্রোজেন পালং শাক, মটরশুঁটি, এবং বিভিন্ন ধরনের মিশ্র সবজি তরকারিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

এছাড়াও, টিনজাত সবজি ও ফলও একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। টিনজাত করার ফলে ফল ও সবজির পুষ্টিগুণ বজায় থাকে এবং এটি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়।

কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন অতিরিক্ত চিনি বা লবণ মেশানো না থাকে। টমেটো, শিম এবং ভুট্টা – এই ধরনের টিনজাত সবজি ও ফল সালাদ, সবজি বা অন্যান্য রান্নার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

সপ্তাহের খাদ্য তালিকা তৈরি করা এবং সে অনুযায়ী বাজার করার অভ্যাস করলে অনেক টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। আগে থেকে পরিকল্পনা করে বাজার করলে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা এবং খাবার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

বাজারের অফার ও মৌসুম অনুযায়ী ফল ও সবজি নির্বাচন করলে খরচ কমানো সহজ হয়।

ফল ও সবজি সংরক্ষণে সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করা জরুরি। কিছু সবজি ফ্রিজে রাখা ভালো, আবার কিছু বাইরে রাখাই ভালো।

যেমন, ফল এবং শাকসবজি, বিশেষ করে পাতাযুক্ত সবজি, তাজা রাখার জন্য এয়ারটাইট পাত্রে ভরে ফ্রিজে রাখা উচিত। অন্যদিকে, কলা, আপেল এবং টমেটো স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখাই ভালো।

অতিরিক্ত ফল বা সবজি থাকলে, তা ফ্রিজে সংরক্ষণ করে অথবা শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।

বাড়িতে জায়গা থাকলে, সবজি চাষ করা একটি চমৎকার উপায়। এতে একদিকে যেমন খরচ বাঁচে, তেমনি টাটকা সবজি খাওয়ার সুযোগ থাকে।

টমেটো, বেগুন, লঙ্কা, অথবা বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির চারা রোপণ করে অল্প জায়গাতেই বাগান তৈরি করা যেতে পারে। এমনকি যাদের বাগান করার মতো জায়গা নেই, তারাও বারান্দায় বা বাড়ির ছাদে কিছু টবে প্রয়োজনীয় সবজির চাষ করতে পারেন।

সুতরাং, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য ফল ও সবজি খাওয়া অপরিহার্য। স্থানীয় বাজার থেকে কেনাকাটা, মৌসুমী ফল ও সবজি নির্বাচন, ফ্রোজেন বা টিনজাত সবজি ব্যবহার, খাদ্য তালিকা তৈরি করা এবং সঠিক সংরক্ষণের মাধ্যমে আপনি সাশ্রয়ী মূল্যে ফল ও সবজির চাহিদা পূরণ করতে পারেন।

এই টিপসগুলো অনুসরণ করে, আপনি স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাবারের মাধ্যমে একটি সুন্দর জীবন উপভোগ করতে পারেন।

তথ্য সূত্র: হেলথলাইন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *