মস্তিষ্কের নতুন স্ক্যান প্রযুক্তি, যা ওষুধ প্রতিরোধী মৃগী রোগীদের জন্য অস্ত্রোপচারের পথ খুলতে পারে।
বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ মিলিয়ন মানুষ মৃগী রোগে আক্রান্ত। ওষুধ প্রয়োগের পরেও যাদের খিঁচুনি বন্ধ হয় না, তাদের জন্য অস্ত্রোপচারই একমাত্র ভরসা।
সম্প্রতি, গবেষকরা একটি অত্যাধুনিক মস্তিষ্ক স্ক্যানিং পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যা এই ধরনের রোগীদের চিকিৎসায় নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে।
সাধারণত, মৃগী রোগের কারণ চিহ্নিত করতে মস্তিষ্কের এমআরআই স্ক্যান (MRI scan) করা হয়। কিন্তু অনেক সময় ছোট আকারের ক্ষত বা সমস্যাগুলো সনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
নতুন এই প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত ৭টি (7T) এমআরআই স্ক্যানার মস্তিষ্কের আরও বিস্তারিত চিত্র সরবরাহ করে, যা ছোট আকারের ক্ষতগুলোও স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করতে সক্ষম।
এই স্ক্যানিং পদ্ধতিতে একটি বিশেষ কৌশল ব্যবহার করা হয়, যেখানে মস্তিষ্কের চারপাশে একটির পরিবর্তে আটটি ট্রান্সমিটার ব্যবহার করা হয়। এর ফলে স্ক্যানিংয়ের সময় “ব্ল্যাক স্পট” বা চিত্রের অস্পষ্টতা অনেক কমে যায় এবং ছবি আরও পরিষ্কার আসে।
যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক এই পদ্ধতির সফল পরীক্ষা চালিয়েছেন।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে সনাক্ত করা গেছে এমন কিছু মস্তিষ্কের ক্ষত, যা আগে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে, অনেক রোগীর চিকিৎসার ধরন পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারী রোগীদের মধ্যে যাদের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল, তাদের অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আবার, কারও কারও ক্ষেত্রে লেজার ইন্টারস্টিশিয়াল থার্মাল থেরাপি (laser interstitial thermal therapy) বা এসইইজি (sEEG) এর মতো উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের একজন নিউরোলজিস্ট ড. থমাস কোপ বলেছেন, “যেসব মৃগী রোগীর খিঁচুনি ওষুধে সারে না, তাদের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
এই নতুন প্রযুক্তির ফলে আরও বেশি সংখ্যক রোগীর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রোগ নিরাময় সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে, মৃগী রোগীদের নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থা, এপিলেপসি সোসাইটির প্রধান, লে স্যান্ডার বলেছেন, “যে কোনো নতুন প্রযুক্তি, যা ওষুধ প্রতিরোধী মৃগী রোগীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে, তাকে স্বাগত জানানো উচিত।
তবে, এই ধরনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য চিকিৎসক ও গবেষকদের পর্যাপ্ত সুযোগ থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান