হিথরোর বিভ্রাটে আকাশ পথে চরম বিপর্যয়! ক্ষতির অঙ্ক শুনলে চমকে যাবেন

হিথ্রো বিমানবন্দরে বিপর্যয়, ক্ষতির আশঙ্কা শতকোটি টাকার উপরে। শুক্রবার লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের কারণে বিমান চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।

এর ফলে কয়েক দিনের জন্য বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুধু যাত্রী সাধারণই নয়, বিমান সংস্থাগুলোরও বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অচলাবস্থা কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত চলতে পারে, যার ফলে কয়েকশ’ কোটি পাউন্ডের আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

এভিয়েশন বিষয়ক পরামর্শক সংস্থা ‘এন্ডাউ অ্যানালিটিক্স’-এর প্রতিষ্ঠাতা শুকুর ইউসুফ সিএনএনকে জানিয়েছেন, এই ক্ষতির পরিমাণ “শত শত মিলিয়ন পাউন্ড” ছাড়িয়ে যেতে পারে। ব্রিটেনের বৃহত্তম এই বিমানবন্দরটিতে গত বছর রেকর্ড ৮ কোটি ৩৯ লাখ যাত্রী চলাচল করেছে, যা এটিকে বিশ্বের চতুর্থ ব্যস্ততম বিমানবন্দরে পরিণত করেছে।

অগ্নিকাণ্ডের কারণে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত হিথ্রো থেকে ছেড়ে যাওয়া ও সেখানে আসার কথা থাকা কয়েকশ’ ফ্লাইট বাতিল বা অন্য বিমানবন্দরে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিমান চলাচল বিষয়ক তথ্য সরবরাহকারী সংস্থা সিরিয়াম-এর মতে, প্রায় ১ লাখ ৪৫ হাজার যাত্রী এই ঘটনার শিকার হতে পারেন।

এই ঘটনার জেরে শুধু বিমান সংস্থা বা যাত্রী সাধারণই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, বরং বিমানবন্দরের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য অনেক ব্যবসা, যেমন – খুচরা বিক্রেতা, পণ্য পরিবহন সংস্থা, জেট ফুয়েল সরবরাহকারী এবং বিমানবন্দরের উপর নির্ভরশীল স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনেও এর প্রভাব পড়বে। অনেক বাংলাদেশি যাত্রী, বিশেষ করে যারা যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন বা বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার জন্য হিথ্রো ব্যবহার করেন, তারাও এই ঘটনার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ইতোমধ্যে তাদের যুক্তরাজ্যে আসার পথে থাকা ফ্লাইটগুলোকে অন্য বিমানবন্দরে অবতরণ করার নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে, শুক্রবার হিথ্রো থেকে উড্ডয়নের কথা থাকা যাত্রীদের পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বিমানবন্দরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।

ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের সাতটি ফ্লাইট হয় তাদের যাত্রা বাতিল করেছে অথবা অন্য বিমানবন্দরে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের তিনটি ফ্লাইট হয় ফ্রাঙ্কফুর্ট বা প্যারিসে অবতরণ করেছে অথবা সিঙ্গাপুরে ফিরে গেছে। হংকংয়ের ক্যাথে প্যাসিফিক এবং অস্ট্রেলিয়ার কান্তাসও তাদের লন্ডনগামী বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল করেছে। এয়ার ইন্ডিয়াও শুক্রবার হিথ্রোর সব ফ্লাইট বাতিল করেছে। ভার্জিন আটলান্টিকও শুক্রবার দুপুরের আগে পর্যন্ত হিথ্রোর সব ফ্লাইট বাতিল করেছে।

বর্তমানে বিমান সংস্থাগুলো তাদের কর্মীদের পুনর্বিন্যাস এবং বিমানের শিডিউল নতুন করে সাজানোর চেষ্টা করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *