অ্যাপল টিভি-র তারকা চমক, দর্শক কই? বাড়ছে ক্ষতির অঙ্ক!

অ্যাপল টিভি প্লাস: বড় তারকা, দর্শক কই?

বর্তমানে বিনোদনের জগতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের চাহিদা বাড়ছে, যেখানে সিনেমা এবং টিভি শো দেখার জন্য মানুষজন ঝুঁকছে।

নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, ডিজনি প্লাস-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সম্প্রতি অ্যাপল তাদের নিজস্ব স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম, অ্যাপল টিভি প্লাস চালু করেছে।

কিন্তু বাজারে আসার কয়েক বছর পরেও, এই প্ল্যাটফর্মটি নিয়ে উঠছে নানান প্রশ্ন।

খরচের খাতা: লোকসানের অঙ্ক

বিভিন্ন সূত্রে খবর, অ্যাপল টিভি প্লাস বর্তমানে বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার লোকসান গুনছে।

বিশাল অংকের এই লোকসানের পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।

প্রথমত, অ্যাপল টিভি প্লাসের অনুষ্ঠান নির্মাণে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ হয়।

তাদের বার্ষিক অনুষ্ঠান নির্মাণ বাজেট ৫ বিলিয়ন ডলার।

এই বিশাল বাজেট সত্ত্বেও, দর্শকদের মধ্যে প্ল্যাটফর্মটির জনপ্রিয়তা সেভাবে বাড়েনি।

উদাহরণস্বরূপ, সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘আর্গাইল’ নামের একটি স্পাই থ্রিলার তৈরিতে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হলেও, সিনেমাটি তেমন ব্যবসা করতে পারেনি।

অনুষ্ঠান কম দেখেন দর্শক

দ্বিতীয় কারণটি হলো, অ্যাপল টিভি প্লাসের গ্রাহক সংখ্যা বাড়লেও, তাদের অনুষ্ঠান দেখার লোকের সংখ্যা খুবই কম।

তথ্য বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে স্ট্রিমিং সার্ভিসের দর্শক সংখ্যার ১ শতাংশেরও কম দর্শক অ্যাপল টিভি প্লাসের অনুষ্ঠান দেখে।

যেখানে নেটফ্লিক্সের সাবস্ক্রিপশন ফি মাসে প্রায় ১৮ ডলার, সেখানে অ্যাপল টিভি প্লাসের সাবস্ক্রিপশন ফি প্রায় ৯ ডলার।

অর্থাৎ, নেটফ্লিক্সের তুলনায় অর্ধেক দামে সাবস্ক্রিপশন পাওয়া গেলেও, মানুষজন অ্যাপলের চেয়ে নেটফ্লিক্সে আটগুণ বেশি কন্টেন্ট দেখে।

জনপ্রিয়তার দৌড়ে পিছিয়ে

অ্যাপল টিভি প্লাসে বেশ কয়েকজন জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রী কাজ করেছেন।

উদাহরণস্বরূপ, ন্যাটালি পোর্টম্যান, হ্যারিসন ফোর্ড, অস্টিন বাটলার, কেট ব্ল্যানচেট, জেইক জিলেনহাল, কলিন ফারেল, ব্রি লারসন-এর মতো তারকারা এই প্ল্যাটফর্মে কাজ করেছেন।

কিন্তু তাদের অভিনীত অনুষ্ঠানগুলো দর্শকদের মধ্যে তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি।

কিছু ব্যতিক্রম

তবে, অ্যাপল টিভি প্লাসের কিছু অনুষ্ঠান দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

‘সেভারেন্স’ নামের একটি সিরিজ তাদের মধ্যে অন্যতম, যা প্ল্যাটফর্মের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিবার দেখা হয়েছে।

এছাড়া, ‘টেড ল্যাসো’ নামের একটি কমেডি সিরিজও দর্শকদের মধ্যে বেশ পরিচিত।

যদিও সিরিজটির নতুন সিজন এখনো আসেনি, তবুও এর পুরনো পর্বগুলো এখনো অনেকে দেখেন।

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

অ্যাপল পরিস্থিতি পরিবর্তনের চেষ্টা করছে।

তারা তাদের বার্ষিক নির্মাণ বাজেট ৫০০ মিলিয়ন ডলার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সেই সাথে, কর্মীদের ব্যক্তিগত বিমানে চড়ার ক্ষেত্রেও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, অ্যাপল যদি আকর্ষণীয় এবং দর্শকপ্রিয় অনুষ্ঠান তৈরি করতে পারে, তাহলে এই পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তন হতে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *